হার্ট ফেইলিওরের ঘটনা হঠাৎ করেই ঘটে। এর অর্থ এই নয় যে, হৃদয় থেমে গেছে। হৃৎপিণ্ড যখন শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না তখনই এটি ঘটে।
হৃৎপিণ্ডের পেশি দুর্বল হওয়ার কারণেই হার্ট ফেইলিওরের ঘটনা ঘটে। তবে আরও কিছু শারীরিক জটিলতা আছে, যার কারণে হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। ফলে এক সময় হতে পারে হার্ট ফেইল।
হার্ট ফেইলিওর কেন হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকিও বাড়ে। শুধু বয়স্করাই নয় বরং এখন কম বয়সীদের মধ্যেই বেড়েছে হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি।
এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক, হার্টের জন্মগত ত্রুটি বা রক্ত পাম্পিং পেশিতে আঘাত করে এমন রোগের কারণে হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ফুসফুসের রোগও হার্ট ফেলের কারণ হতে পারে। স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও স্লিপ অ্যাপনিয়াও এর ঝুঁকি বাড়ায়।
হার্ট ফেইলিওয়ের লক্ষণ কী কী?
১. বিশ্রামে থাকার সময়ও যদি নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এর কারণ হলো হৃৎপিণ্ড ফুসফুস থেকে রক্তের প্রবাহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হবে।
২. হাত-পায়ের শক্তি কমে যায়। হৃৎপিণ্ড সঠিকভাবে পাম্প না করলে মস্তিষ্ক শরীরের কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে রক্ত নিয়ে যায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে। ফলে সামান্য হাঁটলেও কষ্ট হয় ও মাথা ঘোরে।
৩. শ্বাসকষ্ট ও কাশির লক্ষনও হতে পারে হার্ট ফেইলিওরের। এক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে সাদা বা গোলাপি শ্লেষ্মা বের হতে পারে।
৪. হঠাৎ করেই পা ফুলে যাওয়া কিংবা ওজন বেড়ে যাওয়া হার্ট ফেইলিওরের আগাম লক্ষ হতে পারে। শরীরে তরল জমার কারণে পা, গোড়ালি, পেট ফুলে যেতে পারে।
৫. বমি বমি ভাবও হতে পারে।
৬. আবার সব সময় পেট ভরা অনুভব করাও খারাপ লক্ষণ। এমনটি ঘটার কারণ হলো আপনার পাচনতন্ত্র পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পাচ্ছে না।
৭. যখন আপনার হৃদয় পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখন হার্টবিট বেড়ে যায়। যা হার্ট ফেইলিওরের এটি সতর্কতামূলক লক্ষণ।
৮. বিভ্রান্তি বা অলসতাও হতে পারে হার্ট ফেলের আগাম লক্ষণ। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন বিষয় ভুলে যেতে পারেন।
যখন রক্তের অভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ভালোভাবে কাজ করে না, তখন রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণকে প্রভাবিত করে। যা মস্তিষ্কও কার্যকারিতা হারায়।
হার্ট ফেইলিওর প্রতিরোধে করণীয়
>> ভালো খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা নিশ্চিত করুন।
>> ধূমপান ছাড়ুন।
>> হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান।
>> ডায়েটে কম-সোডিয়ামযুক্ত খাবার রাখুন।
>> ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
>> জল ও তরল খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।
>> স্ট্রেস কমান।
>> ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন।
>> পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করুন।