শরীর সুস্থ রাখতে শরীরচর্চা বিকল্প নেই। ঠিক একইভাবে শরীরচর্চা করতে মনও ভালো থাকে। তবে শরীর ও মন উভয় ভালো রাখতে নাচ নাকি বেশি উপকারী, এমনটিই জানাচ্ছে নতুন গবেষণা।
এর ফলে ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়ে। কগনিটিভ স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়ে মনের উপর। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে কিছু নিউরোট্রান্সমিটার থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকতে হলে এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। ব্যায়াম বা শারীরিক সক্রিয়তা সেই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে অন্য কথা। ব্যায়ামের থেকে নাকি নাচেই বেশি উপকার। ঠিকভাবে প্রথা মেনে নাচের অভ্যাস থাকলে তা ব্যায়ামের থেকে বেশি কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের দ্রুত উন্নতি হয়েছে বলে জানাচ্ছে গবেষণা।
সম্প্রতি ৭-৮৫ বছর বয়স্কদের মস্তিষ্কের একটি নিয়মমাফিক ব্লিশেষণ করা হয়। সেই ব্লিশেষণেই জানা গেছে এটি। নাচের একটি ঘরানা নয়, বরং বেশ কয়েকটি ঘরানা নিয়ে এই পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়।
নাচের বিভিন্ন ঘরানার সঙ্গে তুলনা করা হয় হাঁটাহাঁটি ও ভারোত্তলনের। এই প্রতিযোগিতায় নাচই এগিয়ে ছিল বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
শুধু যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে তা নয়। বরং গবেষকদের কথায়, নিউরোলজিক্যাল হেলথও ভালো থাকে। নিউরোলজিক্যাল হেলথের মধ্যে আছে মস্তিষ্ক ও পুরো শরীরের স্নায়ুতন্ত্র।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের স্নায়ু কোষ দুর্বল হতে শুরু করে। কিছু ক্ষেত্রে তাদের কার্যক্ষমতা লোপ পায়। এর থেকে অ্যালঝেইমার্স ডিজিজ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
পাশাপাশি পার্কিনসনস ডিজিজেরও ঝুঁকি বাড়ে। এই সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হলে স্নায়ুতন্ত্রের যথাযথ খেয়াল রাখা জরুরি। দেখা গিয়েছে, নাচ করলে সেদিক থেকে বেশি উপকার।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণার দাবি, নিয়মমাফিক ছয় সপ্তাহ ধরে একটি নাচের রুটিন করে দেওয়া হয়েছিল গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের। তাতেই মানসিক ও কগনিটিভ স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে দেখা গিয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রেই সেই উন্নতি ছাপিয়ে গিয়েছে হাঁটাহাঁটি বা ভারোত্তলনের উপকারিতাকেও। স্নায়ুর বেশ কিছু ক্রনিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে।
সেগুলোর ঝুঁকি নাচ করলেই বেশি কমছে বলে দাবি করেছে ওই গবেষণা। নাচ বিভিন্ন সংস্কৃতির একটি অঙ্গ বলে এর গ্রহণযোগ্যতাও বেশি বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।