দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম, উপকারী না ক্ষতিকর? এড়িয়ে না গিয়ে ফলাফল জেনেনিন

যারা বাড়িতেই থাকেন, দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম তাদের কাছে বেশ পরিচিত অভ্যাস। আর যাদেরকে কর্মক্ষেত্রে থাকতে হয়, দুপুরের খাবার শেষে চেয়ারেই খানিকটা ঝিমিয়ে নেয়ার অভ্যাস তাদের অনেকেরই। তবে দুপুরের এই অল্প একটু ঘুম বা ভাতঘুম উপকারী কি-না তা নিয়ে সন্দিহান থাকেন অনেকে। দুপুরের ঘুম কি উপকারী না-কি ক্ষতির কারণ? চলুন জেনে নেয়া যাক-

দুপুরে ঘুম পায় কেন?

আমরা যখন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলি তখন আমাদের রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ওঠানামা করে। আমরা যে খাবারই খাই না কেন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের শরীর ইনসুলিন তৈরির কাজে লেগে যায়। যখন বেশি খাওয়া হয় তখন ইনসুলিনও বেশি উৎপন্ন হয়। এই হরমোন আমাদের মস্তিষ্কে গিয়ে বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেলাটোনিন ও সেরোটোনিনে পরিণত হয়। মেলাটোনিন ঘুমের হরমোন।

আমরা যখন ভারী খাবার খাই তখন শরীর তা হজম করতে ষাট-সত্তর ভাগ শক্তি খরচ করে। আর এই শক্তি খরচের কারণে আমাদের ঘুম পেতে থাকে। শুধু যে উচ্চ কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার খেলে এমনটা ঘটে তা কিন্তু নয়, প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলেও এমনটা ঘটে। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক, দুপুরে ঘুমালে শরীরে কোন বিষয়গুলো ঘটতে পারে-

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে

রাতের ঘুমের থেকেও দুপুরের ঘুমটুকু আমাদের কাছে প্রশান্তিদায়ক মনে হতে পারে। কারণ দুপুরের ঘুম তখনই হয়, যখন কিছুটা সময় বিশ্রাম পাওয়া যায়। তাই যতটুকু সময়ই ঘুম হোক, দুপুরের ঘুম হয় নিশ্চিন্তে। এসব কারণে দুপুরের ঘুমের ফলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকা মানে অনেক অসুখ থেকেই দূরে থাকা।

মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়

দুপুরের ঘুম কিন্তু আরেকটি বিষয়ে উপকার করে। তা হলো, এটি আমাদের মনে রাখার ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত দুপুরে মিনিট ত্রিশেক ঘুমান, তাদের মনে রাখার ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি হয়।

সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে

আপনি যদি একজন সৃজনশীল মানুষ হয়ে থাকেন তবে দুপুরের ঘুম আপনার জন্য উপকারী হতে পারে। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুপুরের ঘুম সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। দুপুরের ঘুমের ফলে আমাদের মস্তিষ্ক খানিকটা বিশ্রাম পায়, যে কারণে চিন্তা করার ক্ষমতাও বাড়ে অনেকটা।

স্নায়ুর চাপ কমায়

স্নায়ুর চাপ কমাতে সাহায্য করে দুপুরের ঘুম। যদি কোনো কারণে মন খারাপ থাকে বা উদ্বিগ্ন বোধ করেন তবে দুপুরে সুযোগ করে খানিকটা সময় ঘুমিয়ে নিন। এতে মন ভালো থাকবে, কমবে দুশ্চিন্তাও।

ক্লান্তি দূর করে

রাতের ঘুম ভালোভাবে না হলে দিনের সময়টাও কেমন খিটখিটে লাগে। এই সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে দুপুরের ঘুম। দুপুরে কিছুটা সময় ঘুমিয়ে নিতে পারলে ক্লান্তি কাটে। তাই সময় পেলে দুপুরে খানিকটা সময় ঘুমিয়ে নেবেন। এতে ক্ষতির কিছু নেই। বরং মিলবে অনেক উপকার।