পুরুষদের তুলনায় নারীদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি, নারীদের সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা!

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারান হৃদরোগে। অত্যধিক মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ত জীবন— অনেক ক্ষেত্রেই দৈনন্দিন জীবন-যাপনের মধ্যেই নিহিত থাকে হৃদরোগের কারণ। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

‘সেন্টার্স অব ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে এক জন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। গত বছর ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, ভারত-সহ সব দেশে নারীদের কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ বাড়ছে।

পুরুষ আর নবরীর মধ্যে হৃদরোগের উপসর্গগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। নারীর ক্ষেত্রে হৃদরোগ হওয়ার আগে বুকে ব্যথা দেখা যায় না। এক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলো প্রকট হয়।

যে ৫ কারণে নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি—

১. ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে নারীদের ঋতুবন্ধ হয়। ঋতুবন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এ কারণে তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

২. অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক নারী উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। এ সময়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে রক্তনালিকাগুলো দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

৩. ধূমপানের অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের আশঙ্কা। ধূমপান বন্ধ করে দিলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে ৮০ শতাংশ। অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এতেও হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে।

৪. ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এই সব রোগে রক্তনালিকাগুলো সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে। রক্ত প্রবাহে বাধা তৈরি হয়। ফলস্বরূপ হৃদযন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও বেড়ে যায়।

৫. মানসিক চাপে নারীদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদরোগের বড় অনুঘটক। শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ততা এবং অবসাদের কারণে অনেক নারীরা অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এতেও ঝুঁকি বাড়ে।