রহস্যময় এই প্রাণীটি দেখতে অনেকটা ভয়ংকর। অর্ধেক বানর আর অর্ধেক মাছের আকৃতির। অদ্ভূত এই প্রাণীটির দেহাবশেষ পাওয়ার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মেধাবী বিজ্ঞনীরা। আপনি কি জানেন এ অদ্ভুত প্রাণীটির কথা?
বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে গবেষণা চালিয়ে অবশেষে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে রহস্যময় এই প্রাণীটি মূলত ১৯ শতকের প্রাণী। গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন ‘ফিজি মারমেইড’।
রূপকথার মৎস্যকন্যাদের নিয়ে যারা নানা জল্পনা-কল্পনা করে থাকেন, এমন প্রাণীর সন্ধান পাওয়ার পর তারা কিন্তু ভাবতেই পারেন যে পৃথিবীতে মৎস্যকন্যার অস্তিত্ব রয়েছে। কারণ, গবেষণা করে বিজ্ঞানীরাই একে মারমেইড বা মৎস্যকন্যা নামে অভিহিত করছেন।
এই প্রাণীটির প্রথম অস্তিত্বের সন্ধান পান আমেরিকান নাবিকরা। প্রাণীটি নিয়ে তাদের কৌতূহল তৈরি হলে সাগর থেকে প্রাণীটিকে তুলে নেন তারা।
এরপর অদ্ভূত প্রাণীটিকে আমেরিকান ওই নাবিকরা জাপান থেকে ইন্ডিয়ানাতে নিয়ে যান। ১৯০৬ সালে তারাই ক্লার্ক কাউন্টি হিস্টোরিক্যাল সোসাইটিতে এই অদ্ভুত প্রাণীটির দেহাবশেষ দান করেন।
বর্তমানে নর্দান কেনটাকি ইউনিভার্সিটি (NKU) এই রহস্যময় প্রাণীটি নিয়ে গবেষণা করছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের গবেষক আর শিক্ষার্থীরা প্রাণীটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরীসৃপ এই প্রাণীটির দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়ার পর বিজ্ঞানীদের নিরলস গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে কিছু বিশেষ আধুনিক কৌশল।
গবেষণাটি সম্পর্কে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজিক সায়েন্সের অধ্যাপক ডক্টর জোসেফ ক্রেস বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো অদ্ভুত প্রাণীটির দেহাবশেষের কোনো রকম ক্ষতি না করে যতটা সম্ভব তথ্য খুঁজে বের করা। তাই প্রাণীটির কোনো অংশকেই কাটা বা ভাঙা হচ্ছে না। অক্ষত রেখেই এক্স-রে আর সিটি স্ক্যান দিয়ে চলছে গবেষণা।’
অধ্যাপক ডক্টর জোসেফ ক্রেস আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় গবেষণাটি অনেক দীর্ঘ হবে। কারণ, যতবারই প্রাণীটির দেহাবশেষ নিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে ততবারই বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন তথ্য। আমাদের এখনও জানা বাকি পৃথিবীতে এর অস্তিত্ব সর্বপ্রথম কোথায় ছিল?’
গবেষণা নিয়ে রেডিওলজিক বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আমান্ডা নাশালস্কি বলেন, ‘আমি অনেক এক্সাইটেড। কারণ, অদ্ভুত প্রাণীটি এর আগে কোথাও দেখা যায়নি। তাই গবেষণারও সুযোগ হয়নি। আসলে আমি কখনও ভাবিনি যে, পৃথিবীতে সত্যি এমন প্রাণীর অস্তিত্ব আছে!’
গবেষণাটি নিয়ে এরই মধ্যে প্রতিবেদন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতেও। অদ্ভুত প্রাণীটি সম্বন্ধে জানতে নড়েচড়ে বসেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও।