জীবনে উন্নতি করতে চাইলে রাতে যা যা করবেন, দেখেনিন একঝলকে

জীবনে উন্নতি করতে ঘুমানোর অভ্যাস? হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। গভীর ঘুমের অভ্যাস জীবনে উন্নতি ঘটিয়ে আপনাকে করে তুলতে পারে ধনী। ঘুম কমাবে আপনার শরীরের বেড়ে যাওয়া চর্বি। বাড়াবে মস্তির্কের বুদ্ধি। করে তুলবে সুখী। আসবে জীবনে উন্নতি। আসুন জানার চেষ্টা করি।বুদ্ধি বাড়াতে ঘুম : হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল বলছে, প্রয়োজনের চেয়ে ঘুম কম হলে আমাদের মনোযোগ কমে যায়। তথ্য গ্রহন ও প্রক্রিয়াকরণে সমস্যা হয়। আমাদের নিউরনগুলো ক্লান্ত হয়ে যায়। ফলে আমরা অনেক কিছু মনে করতে পারি না। তাই মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখতে চাই ভালো ঘুম।

অর্থ ও ঘুমের মাঝে সম্পর্ক : দরিদ্র মানুষদের ঘুমের অবস্থাও খারাপ। গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৫০ শতাংশ মানুষের আছে অনিদ্রা। আর এ অনিদ্রা কমতে থাকে আয় বাড়ার সাথে সাথেই।জীবনে কখনো বিষণ্ণতা না থাকলেও অনিদ্রা থেকে জন্ম নিতে পারে এটি। আপনার মেজাজ যদি অকারণেই খারাপ হয়, তার পেছনে বড় কারণ হতে পারে কম ঘুম। আর বিষণ্ণতা কারণে হারাতে পারেন কার্যক্ষমতা। এতে পড়তে পারে আপনার ক্যারিয়ারের নেতিবাচক প্রভাব।ঘুম কম হবার কারণে ক্ষুধা বেড়ে যায়। ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার ফলে খাবার খেয়ে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমান বাড়তে থাকে। গভীর ঘুমের অভ্যাস করবেন যেভাবে
১. ঘুমানোর আগে খেতে পারেন এক গ্লাস গরম দুধ।
২. ঘুমানোর আগে পান করতে পারেন গ্রিন টি, যা ঘুমের জন্য সহায়ক।
৩. রুমটাকে একেবারে অন্ধকার করে নিন। অল্প একটু আলোও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
৪. সন্ধ্যার পর থেকে অ্যালকোহল, ক্যাফেইন এবং নিকোটিন গ্রহন একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ এসব গ্রহন করলে ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
৫. স্মার্টফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ ঘুমের ক্ষতি করে। ঘুমাতে যাবার অন্তত এক ঘণ্টা আগে থেকে এসবের ব্যবহার বন্ধ রাখুন। আর বিছানায় ইমেইল বা ফেসবুক চেক করাও বন্ধ করে দিন।

কোনো কিছু নিয়ে উল্টাপাল্টা ভাবনা থেকে শুরু করে অহেতুক দুশ্চিন্তা, হিংসা-বিদ্বেষ, অহঙ্কারের পাশাপাশি স্মৃতি রোমন্থন না করলে সহজেই সাফল্য ধরা দেবে। কয়েকটি বিষয় এড়িয়ে চলুন দুশ্চিন্তা নয়, সমাধানের চিন্তা । জীবনে সফল মানুষরা কখনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে না। তাই, জেনে নিন সফল হওয়ার ১০টি উপায়

১। ঘুম থেকে ওঠা– এক ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে উঠুন- আমরা দেরি করে উঠি। তারপর সময় না পাওয়ার বাহানা খুঁজি সারা দিন। এ দিকে যে কোনও সফল মানুষকে আপনি দেখবেন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে। আপনিও আদ থেকে এক ঘণ্টা এগিয়ে আনুন ঘুম থেকে ওঠার সময়। দেখবেন দিনটা অনেক বড় হয়ে যাবে। প্রথম দিকে একটু অসুবিধা হলেও ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাবে।

২। ভিশুয়ালাইজ– নিজে জীবনে কী করতে চান সেই বিষয়ে যদি আপনার স্বচ্ছ ধারনা থাকে তবেই আপনি জীবনে সফল হতে পারবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের পুরো দিনটা মনে মনে ছকে ফেলুন। সারা দিনে কী করতে চান, কোন কাজটা আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করবে তা মনে মনে ভেবে নিন। নিজেকে সফল ভাবতে শিখুন।

৩। ব্রেকফাস্ট– সারা দিন আপনার মুড ভাল রাখতে, আপনার এনার্জি বাড়াতে কিন্তু সকালে ঠিক করে খাওয়া প্রয়োজন। এ দিকে রোজ সকালে দেরিতে ওঠার জন্য আপনি ব্রেকফাস্টের সময়ই পান না। ব্যস্ততার দোহাই দেবেন না। সফল মানুষরা কিন্তু কখনই ব্রেকফাস্ট বাদ দেন না। তাই রোজ উপভোগ করে ব্রেকফাস্ট করুন।

৪। চেক লিস্টে– গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে রাখবেন না। আমরা কাজ ফেলে রাখি যত ক্ষণ না সেটা আবশ্যিক হয়ে পড়ে। রোজ কী কী করবেন চেক-লিস্ট বানিয়ে ফেলুন। শুনতে জ্ঞানগর্ভ লাগলেও এটা অত্যন্ত ভাল অভ্যাস।

৫। নিজেক মোটিভেট করুন– আলস্য পেয়ে বসতে দেবেন না। সব সময় নিজের লক্ষ্য সামনে রাখুন। হাসির ছবি দেখুন, মন ভাল করে এমন কাজ করুন। রিল্যাক্স করুন। যাতে চাপ কমে এমন কাজ করুন। এই ভাবে নিজেকে মোটিভেট করুন। স্ট্রেস ধারে কাছে ঘেঁষতে দেবেন না।

৬। সক্রিয় থাকুন– ঘুম থেকে উঠেই কাজ শুরু করতে সমস্যা হয়। বাড়ি ফিরেও ক্লান্ত লাগে। হালকা শরীরচর্চা তাই আপনাকে সক্রিয় রাখতে জরুরি। রোজ ঘুম থেকে হালকা ব্যয়ামের রুটিন তৈরি করে ফেলুন। এতে পেশির শিথিলতা বাড়বে, রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়ে আপনার কর্মক্ষমতা বাড়বে।

৭। বাড়ির খাবার খান– অফিসে খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে লাঞ্চ, স্ন্যাকস নিয়ে যান। সফল হতে গেলে সুস্থ থাকতে হবে। তাই বাইরের খাবার না খেয়ে বাড়ির রান্না স্বাস্থকর খাবার খান। এতে সময়ও বাঁচবে। কাজের ফাঁকেই খেয়ে নিতে পারবেন ফলে খাওয়ার সময়ই ঠিকঠাক থাকবে।

৮। অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিন– আপনার ঘর কি অগোছালো? অফিসের ডেস্কে প্রচুর ফালতু কাগজ? অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দিন। বাজে কাগজ বেশি থাকলে কাজের জিনিস খুঁজে পাবেন না। অন্য দিকে ঘর অগাছালো থাকলে আপনার কাজের এনার্জিও কমবে।

৯। রাত জাগবেন না– তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান। সুস্থ, সবল থাকতে রাতের ঘুম প্রয়োজনীয়। অকারণে তাই রাত জাগবেন না। ল্যাপটপ বা মোবাইলে গল্প করে সময় নষ্ট করবেন না রাতে। প্ল্যান করে কাজ করলে রাত জেগে আপনাকে ফেলে রাখা কাজও করতে হবে না।

১০। আশা ছেড়ে না দেয়ার মনোভাবঃ অনেকেই দুএকবার চেষ্টায় সফল হতে না পারলে আশা ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকেন। কিন্তু এভাবে জীবনে সফলতা আনা সম্ভব নয়। হাল ছেড়ে না দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার গুনটি ৩০ এর আগেই সফলতা এনে দিতে পারে জীবনে।

১১। কথা কম বলুন– কথা কম কাজ বেশি। ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছেন এটা। আক্ষরিক অর্থেই সত্যি। সফল মানুষরা কথা কম বলেন। চুপচাপ থাকলে মনসংযোগ বাড়ে, নিজের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার কাজের মান বাড়বে।

১২। নিজের প্রতি পুরো আত্মবিশ্বাসঃ সফল মানুষের অন্যতম প্রধান গুণ হচ্ছে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাসী মানুষ খুব সহজেই ঝুঁকি নিতে পারেন, নিতে পারেন দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্তও কারণ তারা নিজের প্রতি অনেক আস্থা রাখেন। এবং এই গুনটিই তাকে সফল হতে সাহায্য করে।

১৩। আবেগ দিয়ে নয় লজিক দিয়ে চিন্তা করাঃ আবেগ নিয়ে যে চিন্তা করা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল হয়ে থাকে। এতে করে জীবনে উন্নতিটাও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আসে। তাই আবেগটাকে একটু নিয়ন্ত্রণে রেখে যারা লজিক দিয়ে চিন্তা করতে পারেন তারাই পান সফলতার স্বাদ।

১৪। সঠিক অবস্থানে ঝুঁকি নেয়ার প্রবণতাঃ আপনি যদি জীবনে সঠিক সময়ে ঝুঁকি নিয়ে না জানেন তবে আপনার সফলতা একটু দেরিতেই আসবে। কারণ আপনি যে সুযোগের অপেক্ষা করছেন তা আপনি নিজে তৈরি করে না নিতে পারলে কেউ করে দেবে না। বরং সুযোগ একেরপর এক হারাতেই থাকবেন।

১৫। কাজকে জীবনের অংশ করে নেয়াঃ কাজটাকে শুধুমাত্র বোরিং এবং জীবন ধারণের একটি বিরক্তিকর অংশ বলে ধরে নেয়া কাজের স্পৃহা কমিয়ে দেয়। সেই সাথে কমায় উন্নতি পাবার সম্ভাবনা। যারা কাজটাকে জীবনের অংশ হিসেবে মানতে পারেন তারাই সফলতা দেখেন।

১৬। বিফল হলেও তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে দাঁড়ানোর চেষ্টাঃ যারা সফল মানুষ তারা যে জীবনে বিফল হননি কখনো এমনটা কিন্তু নয়। তারাও বিফলতার তিক্ততা ভোগ করেছেন কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে সেই বিফলতাকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে চলার বিশেষ গুনটি।

১৭। দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাঃ অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করা এবং দ্বিধা কাজ করার ফলে আমরা অনেক সুযোগ হারিয়ে ফেলি। যারা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে একেবারেই দেরি করেন না তারাই বেশ অল্প বয়সেই সফল হন।