দাঁত বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এর অর্থ হলো, আপনি পাইওরিয়া বা দাঁত-মাড়ি সংক্রমণে ভুগছেন। তবে জেনে অবাক হবেন, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া কিন্তু লিভারের রোগেরও লক্ষণ হতে পারে। তবে বেশিরভাগ লোকেরাই উপসর্গটি উপেক্ষা করে।
লিভার সম্পর্কিত অনেক রোগ আছে যার মধ্যে একটি হলো নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএল) অন্যতম। লিভারের এই রোগ অ্যালকোহল সেবনের কারণে নয় বরং অনিয়মিত জীবনযাত্রা ও স্থূলতার কারণে হয়।
লিভার শরীরে ৫০০টিরও বেশি কাজ করে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা ও রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করা।
এ কারণে ফ্যাটি লিভার রোগের সময়মতো নির্ণয় ও চিকিত্সা অপরিহার্য। না হলে সারা শরীরেই জটিলতা দেখা দিতে পারে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক লিভারের রোগের সঙ্গে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার সম্পর্ক কোথায়-
মুখের মধ্যে রক্তপাত ফ্যাটি লিভার রোগের লক্ষণ হতে পারে। সিরোসিস ফ্যাটি লিভার রোগের সবচেয়ে গুরুতর পর্যায়। এতে লিভার ক্ষতবিক্ষত, নোডুলার ও সঙ্কুচিত হয়ে যায়।
দীর্ঘমেয়াদী লিভারের ক্ষতিতে লিভারে সুস্থ টিস্যু প্রতিস্থাপনের জন্য দাগের টিস্যু সৃষ্টি করে। যা লিভারকে সঠিকভাবে কাজ করতে বাধা দেয়। সিরোসিস লিভার ফেইলিওরেরও কারণ হতে পারে। কিছু লক্ষণ আছে যা ইঙ্গিত দিতে পারে আপনার লিভারের সমস্যা আছে।
এনসিবিআইয়ের এক সমীক্ষা অনুসারে, দাঁত ব্রাশ করার সময় মাড়ি থেকে রক্ত পড়া গুরুতর ফ্যাটি লিভার রোগের লক্ষণ হতে পারে। শুধু তাই নয়, এর কারণে ঘন ঘন নাক দিয়ে রক্তও পড়তে পারে।
এক্ষেত্রে পিরিয়ডোনটাইটিসেরও সমস্যা হতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে মাড়িতে একটি গুরুতর সংক্রমণ হতে পারে, যা দাঁতের চারপাশের টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
লিভারের রোগের অন্যান্য লক্ষণ কী কী?
লিভার সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা হারালে বেশ কয়েকটি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- ক্ষুধা কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব ও ত্বকে চুলকানি অনুভূত হতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের গুরুতর লক্ষণ কী কী?
ফ্যাটি লিভার ডিজিজের পরবর্তী পর্যায়ে গুরুতর সমস্যা যেমন- জন্ডিস, রক্ত বমি, কালো মল, পা ও পেটে তরল জমা হওয়া, ক্লান্তি, দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া ও পেশী হ্রাস’সহ শরীরে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকির কারণ কী?
ফ্যাটি লিভারের রোগের ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে আছে- টাইপ ২ ডায়াবেটিস, কম সক্রিয় থাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, বিপাকীয় সিনড্রোম, ৫০ বছরের বেশি বয়সী হওয়া ইত্যাদি। আপনি যদি উপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলো অনুভব করেন তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।