এ সময় ডায়রিয়া হলে যা যা করবেন জেনেনিন কিছু তথ্য

Written by News Desk

Published on:

শীতের শেষে গরম পড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়ার ওঠা-নামায় এ সময় বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধছে। ঠান্ডা-জ্বর-কাশিসহ ডায়রিয়ার প্রকোপও বেড়ে যায় এ সময়। হঠাৎ যদি কারও দিনে তিন বা এর চেয়ে বেশিবার পাতলা পায়খানা হয়; তাহলে ডায়রিয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

পরিপাকতন্ত্রে সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমণের কারণে ডায়রিয়া হয়। ডায়রিয়ার প্রধান কারণ রোটা ও নোরো ভাইরাস। পাতলা পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে বা প্রচণ্ড জ্বর দেখা দিলে তা ভাইরাস নয়, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমণের কারণে হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।

ডায়রিয়া কারণ

ডায়রিয়া জলবাহিত রোগ। দূষিত জল পান করার জন্য এ রোগ হয়। শহরে ট্যাপের জল অনেক সময় সেপটিক ট্যাংক বা সুয়ারেজ লাইনের সংস্পর্শে হলে দূষিত হয়।

অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, যেখানে-সেখানে ও জলর উৎসের কাছে মলত্যাগ, সঠিক উপায়ে হাত না ধোয়া, অপরিচ্ছন্ন উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণ এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে এ সময় দোকান, রেস্তোরাঁ বা বাসায় ফ্রিজের খাবারে পচন ধরা ইত্যাদি ডায়রিয়ার কারণ। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই বাইরের খাবার খেয়ে থাকেন। যা অস্বাস্থ্যকর জল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। গরমে খাবারও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই রাস্তায় পাশে বা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় যেসব খাবার আমরা খাই, গরমের কারণে সেগুলোও বেশিক্ষণ খাবারের উপযোগী থাকে না। এসব কারণেই ডায়রিয়া হয়ে থাকে।

এ ছাড়াও জলশূন্যতাসহ নানা রোগের উপসর্গ হিসেবে এ সময় ডায়রিয়া হতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম-

>> প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর অন্তত দুই গ্লাস খাবার স্যালাইন পান করুন। সঠিক পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ জল দিয়ে ও হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে স্যালাইন তৈরি করতে হবে।

>> পাতলা পায়খানার সঙ্গে রক্ত, জ্বর, প্রচণ্ড পেটব্যথা বা কামড়ানো, পিচ্ছিল মল, মলত্যাগে ব্যথা ইত্যাদি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন।

>> যথেষ্ট প্রস্রাব হচ্ছে কি না, খেয়াল করুন। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, চোখ গর্তে ঢুকে যাওয়া বা জিহ্বা ও ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া জলশূন্যতার লক্ষণ।

>> ইউনিসেফের গবেষণা অনুযায়ী, মলত্যাগ করার পর সাবান দিয়ে হাত ধুলে ডায়রিয়ার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ হ্রাস করে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

>> নখ কেটে সব সময় ছোট রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে তারা বাইরে খেলাধুলা করে, ঘরের ছোট ছোট জিনিস হাতে নিয়ে মুখে দেয়।

>> খাবার সব সময় ঢেকে রাখা উচিত। পরিষ্কার স্থানে খাবার রাখতে হবে।

>> সবসময় ঘরে স্যালাইন ও জিঙ্ক ট্যাবলেট রাখা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শে জিঙ্ক ট্যাবলেট খেলে ভবিষ্যতে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

>> ইউএস লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে, ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণ করবেন না। এতে পেট ব্যথা করতে পারে এবং ডায়রিয়াও বেড়ে যাবে।

>> যেসব ফল ও সবজি খেলে গ্যাস্ট্রিকের আশঙ্কা থাকে; সেগুলো খাবেন না। এতে অন্ত্রের গ্যাস বেড়ে যেতে পারে। যেমন- মটরশুটি, মটর, ব্রোকোলি, কর্ন, কুকিজ বা কেকের মতো মিষ্টি খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যাবে। যার ফলে ডায়রিয়া আরও বেড়ে যাবে।

>> দুধের তৈরি কোনো খাবার খাওয়া যাবে না। দুধ ডায়রিয়ার কারণ হয়ে থাকে।RS

>> ইউএস লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে, ডায়রিয়া হলে ভাজা খাবার খাবেন না। গরুর মাংস, মুরগি, মাছ বা টার্কির মাংস ঝোল করে রান্না করে খেতে পারেন, তবে ভাজা নয়।

>> ডায়রিয়া হলে শরীরচর্চা করবেন না। কঠোর অনুশীলনে ডিহাইড্রেশন, পাকস্থলীর সমস্যা, বমি বমি ভাব এবং অম্বল হওয়ার লক্ষণগুলো আরও বেড়ে যায়।

Related News