কাজের চাপ কাটাতে হোক বা অবসরের আড্ডায়, চা-কফির কোনও বিকল্প হয় না। আর বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারের দোকানে দাঁড়িয়ে চা-কফি খাওয়া মানেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের কাপে খাওয়া। কাঁচের কাপের দামের তুলনায় এর দাম অনেকটাই কম। তাই কাঁচের কাপের বিকল্প হয়ে উঠেছে প্লাস্টিকের কাপ।
কিন্তু চিকিত্সকদের মতে, প্লাস্টিকের কাপে চা খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। তাদের মতে, প্লাস্টিকের তৈরি জলের বোতল ও শিশুদের দুধের বোতল, প্লাস্টিকের পাত্রের খাবার মাইক্রোওয়েভ অভেনে গরম করা, প্লাস্টিক মোড়কে বিক্রি হওয়া খাবার, প্রসেস্ড ফুড, ইনস্ট্যান্ট নুডল্স— এমন বহু জিনিসের ব্যবহার ডেকে আনছে এমন নানা রোগ।
গবেষকদের মতে, প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা বিসফেনল-এ নামের টক্সিক এ ক্ষেত্রে বড় ঘাতক। গরম খাবার বা পানীয় প্লাস্টিকের সংস্পর্শে এলে ওই রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে মেশে। এটি নিয়মিত শরীরে ঢুকলে মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের কাজের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণু কমে যায়। হার্ট, কিডনি, লিভার, ফুসফুস এবং ত্বকও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকী, স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
গবেষণায় জানা গিয়েছে, প্লাস্টিকের কাপ বানাতে সাধারণত যে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ক্লান্তি, হরমোনের ভারসাম্যতা হারানো, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া-সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন, বোতল বা পাত্র তৈরিতে ব্যবহৃত পলিভিনাইল ক্লোরাইডকে (পিভিসি) নরম করা হয় থ্যালেট ব্যবহার করে। এই থ্যালেট আমাদের শরীরের পক্ষে বিষ। বিদেশের একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরে এই রাসায়নিক নিয়মিত ঢুকতে থাকলে শ্বাসকষ্ট, স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবিটিস, কম বুদ্ধাঙ্ক, অটিজম, ব্রেস্ট ক্যানসারের মতো অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে।
সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় উঠে আসছে এ ভারতে ক্যানসারের বিস্তারের ভয়াবহ ছবিটা। এই রোগে আক্রান্তের দিক থেকে চিন এবং আমেরিকার পরেই ভারতের স্থান। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এ দেশে প্রতি বছর ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ৪.৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে। তাই দীর্ঘদিন সুস্থ শরীরে বাঁচতে এখই বর্জন করুন, এড়িয়ে চলুন প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাস, পাত্র