প্রাচীনকাল থেকেই একটি কথা প্রচলিত আছে—“দুধ আর মাছ একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়”। অনেকে বলেন এতে শরীরে দাগ হয়, চর্মরোগ বা অ্যালার্জি দেখা দেয়। আবার কেউ কেউ বলেন, এটা শুধুই কুসংস্কার। তাহলে আসল সত্যিটা কী?
আয়ুর্বেদের ব্যাখ্যা:
আয়ুর্বেদ মতে, দুধ ও মাছ—দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির খাবার।
-
দুধ হলো শীতল প্রকৃতির খাদ্য।
-
মাছ হলো উষ্ণ প্রকৃতির খাদ্য।
এই দুই ধরনের খাবার একসঙ্গে খেলে শরীরের ভেতরে “বিরোধী রাস” তৈরি হয়, যা হজমে সমস্যা ঘটায়। অনেক সময় ত্বকের সমস্যা, র্যাশ বা অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।
বিজ্ঞান কী বলছে?
আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, দুধ ও মাছ একসঙ্গে খেলে সরাসরি কোনো বিষক্রিয়া হয় না। তবে কারও যদি আগে থেকেই অ্যালার্জির প্রবণতা থাকে, তাহলে এ ধরনের খাবারের সংমিশ্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ দুটোই প্রোটিনসমৃদ্ধ, ফলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ইমিউন সিস্টেমে প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
কোন পরিস্থিতিতে সমস্যা বাড়ে?
-
একসঙ্গে অনেক পরিমাণ দুধ ও মাছ খাওয়া হলে
-
যদি দুধ ভালোভাবে সিদ্ধ না হয় বা মাছ ভালোভাবে রান্না না হয়
-
যদি শরীরে আগে থেকেই স্কিন অ্যালার্জি বা হজম সমস্যা থাকে
কীভাবে খাবেন নিরাপদে:
-
দুধ ও মাছের মাঝে অন্তত ৪–৫ ঘণ্টার বিরতি রাখুন।
-
একসঙ্গে না খেয়ে, আলাদা সময় খেলে কোনো সমস্যা হয় না।
-
শিশু, গর্ভবতী নারী বা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
তাহলে শেষ কথা:
সবাইয়ের শরীর একরকম নয়। কারও ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, কারও ক্ষেত্রে একেবারেই না। তাই একসঙ্গে দুধ ও মাছ খাওয়ার আগে নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বোঝা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
যদি কখনো একসঙ্গে খাওয়ার পর ত্বকে চুলকানি, পেট ব্যথা বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তাই “দুধ আর মাছ একসঙ্গে খেলে দাগ হয়”—এই কথা সম্পূর্ণ মিথ নয়, আবার পুরোপুরি সত্যিও নয়। সবটাই নির্ভর করে শরীরের হজমক্ষমতা ও খাবার প্রস্তুতির ওপর।












