বিচ্ছেদের কিছুদিন পর জানতে পারেন, প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা

ইউটিউবে অফিসিয়াল পিপল অব ইন্ডিয়া (পই) চ্যানেলটির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে, সাবসক্রাইবারের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১১ লাখ। এই চ্যানেল থেকে ভারতের অনুপ্রেরণাময় মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে প্রকাশিত হয় প্রামাণ্যচিত্র। সেগুলোর সবই সংগ্রাম, ভালোবাসা আর আশার গল্প। আমরা যে গল্পটি নিয়ে এখন কথা বলব, সেটির শিরোনাম ‘আই ফট ফর মাই ডটারস লাইফ’।

তরুণের নাম রিংকু আর মেয়েটার নাম অনিতা (ধরে নিই, এখানে সঙ্গত কারণে নারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে)। রিংকুর সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পর অনিতা জানতে পারেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

এরপর তাঁরা দুজনে ডাক্তারের কাছে গিয়ে আলট্রাসনো করে জানতে পারেন, চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অন্যান্য কারণে অনিতা সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তাঁর সন্তানকে জন্ম দেবেন।

রিংকু তাঁর প্রেমিকার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের সম্পর্কটাকে আরেকবার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। রিংকু বলেন, ‘চলো, আমাদের সন্তানের জন্য আমরা বিয়ে করি। এখান থেকে আবার নতুন করে শুরু করি। এখান থেকে সব ভালো হবে।’ শুরুতে রাজিও হন অনিতা। তবে কিছুদিন পর অদ্ভুত আচরণ করতে থাকেন। পরে রিংকু বুঝতে পারেন যে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন অনিতা।

একদিন রিংকুর সঙ্গে তাঁর প্রেমিককে পরিচয়ও করিয়ে দেন অনিতা আর জানান, ওই প্রেমিককেই বিয়ে করবেন। মানসিকভাবে জটিল একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান রিংকু। তবে অনিতার সিদ্ধান্তকেও শ্রদ্ধা জানান। যথাসময়ে জন্ম নেয় রিংকু আর অনিতার সন্তান ইভ (আসল নাম)।

সাবেক প্রেমিকের সন্তান নিয়ে অন্য এক পুরুষকে বিয়ে করেন অনিতা। বিয়ের কিছুদিন পর ইভকে অনাথ আশ্রমে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। অনিতা আর তাঁর জীবনসঙ্গী দুজনেই রিংকুকে ইভের থেকে দূরে থাকতে বলেন। এমনকি এ জন্য অর্থও ‘অফার’ করেন। রিংকু তাঁর কন্যার অভিভাবকত্বের জন্য আইনি লড়াই শুরু করেন। সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রায় এক বছর পর আদালত রিংকুর পক্ষে রায় দেন।

ইভের বয়স এখন সাড়ে চার বছর। আর রিংকু বলেন, ‘ইভ আমার জীবনের সেরা উপহার। আমি একজন গর্বিত, সুখী সিঙ্গেল ফাদার। আমার সন্তানকে সুন্দরভাবে বড় করাই এখন আমার জীবনের আসল লক্ষ্য।’ ইভকে বড় করার যাত্রায় রিংকুর সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন তাঁর মা–বাবাও। যদিও শুরুতে রিংকুর আইনি লড়াইয়ে পাশে ছিলেন না তাঁরা।

শুধু ইউটিউবেই এই রিল দেখা হয়েছে ৩ কোটির বেশিবার। গল্পটি পছন্দ করেছেন ১৪ লাখ মানুষ। আর ভিডিওটির নিচে জড়ো হয়েছে ১২ হাজারের বেশি মন্তব্য। সেখানে প্রায় সবাই রিংকুর পক্ষে লিখেছেন। অনেকেই জানিয়েছে, যেকোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য তাঁদের জানাতে।