পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কাঁচা বা পাকা সব অবস্থাতেই পেঁপে খাওয়া যায়। পেঁপে খেয়ে সাধারণত এর বীজগুলো ফেলে দেওয়া হয়। তবে জানেন কি? ছোট কালো কালো এ বীজ মহৌষধ হিসেবে কাজ করে।
এ বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে আছে নানা ভিটামিন ও ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো জরুরি কিছু মিনারেল। এটি ফ্ল্যাবনয়েডের অন্যতম উৎস, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এসব উপাদান শরীরের একাধিক রোগের সমাধান করতে পারে।
পেঁপের বীজগুলো সংরক্ষণ করে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে খাওয়া যায়। পরিমিত এ বীজ খেলে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন উন্নতি ঘটে। এ বীজ খেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পাওয়া যায়। জেনে নিন পেঁপের বীজ খেলে সেসব উপকারিতা পাবে আপনার শরীর-
>> অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে পেঁপের বীজে। যদি সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করা হয়; তবে স্ট্যাফিলোকক্কাস, সালমোনেলা টাইফি, সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা, কোলির মতো ব্যাকটেরিয়া এড়ানো যায়।
>> দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও পেঁপের বীজ কার্যকারী। এ বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবারজাতীয় খাবার খেলে রক্তে চিনি শোষণ করে। অন্যদিকে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরি করতে অনেক সময় পায়।
>> শুধু স্বাস্থ্য নয় বরং ত্বকের জন্য পেঁপের বীজ উপকারী। এতে অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য আছে; যা ত্বকের বলিরেখা সহজেই দূর বরে।
>> পেঁপের বীজ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন সি, ক্ষারকোষ, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং পলিফেনলগুলোর মতো যৌগসমৃদ্ধ। এসব যৌগ বাতজনিত ব্যথা কমায়। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে।
>> হৃদরোগের সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। পেঁপের বীজ তাদের জন্য উপকারী। এতে থাকা প্যানাসিয়া হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এ বীজে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, এ বীজ নিয়মিত সেবন করলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
>> যেহেতু পেঁপের বীজ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ; তাই ক্যান্সারের কোষকে বাড়তে দেয় না এর পুষ্টিগুণ। নিয়মিত পেঁপের বীজ খেলে ক্যান্সার নিরাময় করাও সম্ভব! এ বীজে উপস্থিত আইসোথিয়োকানেট ক্যান্সার কোষগুলোর গঠন এবং বিকাশ থেকে রক্ষা করতেও সহায়ক।
>> ওজন কমানোর এক প্রাকৃতিক দাওয়াই হলো পেঁপের বীজ। ফাইবার থাকায় ওজন দ্রুত কমতে পারে এ বীজ। এটি খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে। ফলে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। আমাদের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে পেঁপের বীজে থাকা উপাদান।
>> যারা ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন; তাদের জন্যও পেঁপের বীজ উপকারী। প্রতিদিন পেঁপের বীজের গুঁড়ো এক চামচ নিয়ে হালকা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে শরীরের টক্সিন দূর হয়।
সতকর্তা-
>> গর্ভাবস্থায় পেঁপের বীজ খাওয়া উচিত নয়।
>> পেঁপের বীজ অতিরিক্ত খেলে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে শুরু করে।
>> পেঁপের বীজ অতিরিক্ত সেবনে ডায়রিয়া হতে পারে।
>> দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য পেঁপের বীজ না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
>> প্রতিদিন ১ চা চামচ পরিমাণে পেঁপের বীজ বা এর গুঁড়ো খাওয়া উচিত। এর বেশি খেলে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।