আধা ঘণ্টা কাজের পর হেঁটে আসুন তিন মিনিট, আর ম্যাজিকের মতো ফল পান

প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে আজকাল বেশিরভাগ কাজ করা যায় কম্পিউটারের মাধ্যমে। ফলে, কায়িক পরিশ্রম কমে গিয়েছে, বেড়েছে মাথা খাটানোর কাজ। আজকাল বেশিরভাগ অফিসেই টানা বসে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করতে হয়। দিনের মধ্যে দীর্ঘ ৮-১১ ঘণ্টা আমাদের চেয়ারে বসে কাজ করতে হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে- একটানা চেয়ারে বসে কাজ করলে অপেক্ষা করছে মারাত্মক বিপদ।

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই টানা বসে কাজ করাটা নিত্যদিনের ঘটনা। এপিডেমিওলজিক্যাল স্টাডিজ অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্ত বয়স্করা দিনে ছয় থেকে ১২ ঘণ্টা বসে থাকেন, যার বেশিরভাগই দাঁড়ানো এবং হাঁটা ছাড়া। এখন দেশেও এর ব্যাতিক্রম নয়। যা অনেকটাই বেড়েছে করোনা মহামারীকালে। এসময় অনেক মানুষই শারীরিকভাবে বেশি অলস হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যাদের বাসায় ছোট বাচ্চা আছে এবং যারা চাকরী করেন। কারণ এসময় অনেকেরই হোম অফিস করতে হয়েছে এবং বাচ্চাদের ক্লাসও অনলাইনে হয়েছে।

একটি বাস্তবসম্মত গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ডেস্কে বসে কাজ করলে, পরিপাকতন্ত্রে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বেই। আর তা যদি চলতে থাকে দিনের পর দিন, তাহলে দেখা দিতে পারে ডায়বেটিস এবং হাই কোলেস্টেরল। অনেকসময় শরীরিকভাবে দেখতে সুস্থ্য ব্যাক্তিও টানা বসে থাকার কারণে এসব রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, আধা ঘণ্টা টানা বসে থাকার ক্ষতি কাটিয়ে দেয় তিন মিনিটের হাঁটা। কয়েকটি সিড়িঁ ভাঙা, কিংবা কয়েকটা লাফ দেয়ার মতো, মাত্র ১৫ স্টেপ হাঁটাও শরীরে জন্য একইরকম উপকারী। বরং এই হাঁটা আলাদাভাবে কারও চোখে পড়বে না, অর্থাৎ অফিসে ডেস্কে বসে কাজের ফাঁকে আপনার এই এক্সারসাইজ আলাদাভাবে অন্য সহকর্মীদের চোখেও পড়বে না।

গবেষণায় দেখা গেছে, জেগে থেকেও শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা, ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। যখন আমরা বসে থাকি, তখন আমাদের পায়ের মাংসপেশী সচল থাকে এবং এজন্য ন্যূনতম ক্যালোরি প্রয়োজন, যা আসে আমাদের রক্ত থেকে। তবে শারীরিক চলাচল না থাকায় পেশী গুলো কোনো জৈব রাসায়নিক পদার্থ নি:স্বরণ করেনা। তাই রক্তে কোলেস্টেরল এবং সুগার ভাঙতে পারে না, বরং জমতে থাকে। পেশি থেকে নির্গত জৈব রাসায়নিক পদার্থ গুলোই মূলত কোলেস্টেরল এবং রক্তের ফ্যাটি এসিড ভাঙতে সাহায্য করে।

তাই সুস্থ থাকতে হলে প্রতি আধাঘণ্টা পর কাজের জায়গা থেকে উঠুন, একটু হাঁটুন, ওয়াশরুমে যান, চা-কফি পান করুন। মিনিট তিনেক পর আবার কাজে বসুন। এজন্য একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন অথবা আপনার ফোন কিংবা ল্যাপটপে অ্যালার্ম দিয়ে রাখতে পারেন যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর, ওঠার কথা মনে করিয়ে দিবে।