সুস্থ থাকার জন্য ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। নানা কারণ ও অনিয়মের ফলে ওজন বেড়ে যেতেই পারে। তবে ওজন কমানোর বিষয়ে হেলাফেলা না করে সতর্ক হয়ে তবেই ওজন কমানো প্রয়োজন। অনেকেই অল্প সময়ের মাঝে অনেক বেশি ওজন একসাথে কমাতে চান, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এতে করে বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে।
এদিকে অনেকের ক্ষেত্রে সহজে বাড়তি ওজন কমতেই চায় না। দিনের পর দিন সময় পার হয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছান সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে ও নিরাপদভাবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওজন কমাতে চাইলে প্রধান যে নিয়মগুলো মানতেই হবে সেগুলো জানানো হয়েছে আজকের ফিচারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি খেতে হবে
বাড়তি ওজনকে কমিয়ে আনতে চাইলে সবচেয়ে প্রথমেই খাদ্যাভ্যাসে সবজিকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রতি বেলার খাবারে ৫০ শতাংশ রাখতে হবে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যকর সবজি। এই নিয়মে ওজন কমার পাশাপাশি স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটবে। এছাড়া সবজির পাশাপাশু স্বাস্থ্যকর ও সাইট্রাস ঘরানার ফলকেও প্রাধান্য দিতে হবে। টক ফল ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বড় ধরণের সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ফল
সারাদিনের যেকোন বেলার খাবারের চাইতে সকালের নাশতার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। বিশেষত যারা ওজন কমানোর পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য বিশেষ জরুরি সকালের খাবারে মনযোগী হওয়া। সকালে খেতে ইচ্ছা না করলেও, পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সকালের নাশতা খাওয়া চাই ভরপেট। পুষ্টি সম্পন্ন খাবারের বিষয়টি মাথায় রেখে ডিম, ওটস, সবজি, ফল, বাদাম, লিন মিট (মুরগীর মাংস) এবং অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি দিয়ে সাজাতে হবে সকালের খাবারের মেন্যু। সাথে কার্বের ব্রাউন রাইস অথবা হোল গ্রেইন ব্রাউন পাউরুটি রাখা যেতে পারে।
লবণ গ্রহণে প্রয়োজন সতর্কতা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে লবণ। সাধারণভাবে লবণ স্বাস্থ্যের জন্যে কোনভাবেই ভালো কিছু নয়। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত বিভিন্ন খাবারে উপস্থিত উচ্চ মাত্রার লবণ আরও বেশি ক্ষতিকর। যত বেশি লবণ গ্রহণ করা হবে, সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ততই বৃদ্ধি পাবে। যা হৃদযন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এক উপাদান। তাই কোন ধরণের খাবার খাওয়া হচ্ছে এবং কি পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা হচ্ছে, এই বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
ঝাল খাওয়ার অভ্যাস করুন
যারা বেশ ভালো ঝাল খাবার খেতে পারেন তাদের জন্য সুসংবাদই বটে। কথিত কোন বিষয় নয়, বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ঝাল খাবার গ্রহণ ওজন কমাতে অবদান রাখে। কাঁচামরিচের থাকা ক্যাপসাইসিন (Capsaicin) নামক উপাদান সামান্য পরিমাণে হলেও অ্যাড্রেনালাইন (Adrenaline) নামক স্ট্রেস হরমোনকে নিঃসরণ করে, যা ওজন ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে। এছাড়া ঝাল খাবার, খাবার খাওয়ার গতিকে কমিয়ে আনে। যা পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে সহায়ক। এছাড়া যারা ভাবেন ঝাল খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করে, জেনে রাখুন কাঁচামরিচ গ্রহণে এমন কোন আশঙ্কা নেই। এক্ষেত্রে শুকনা মরিচ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
হাঁটা
খাদ্যাভ্যাসে নিয়ম মেনে চলার সঙ্গে সঙ্গী হিসেবে নিয়মিত হাঁটার চর্চাকেও পাশে রাখা চাই। শুধুমাত্র নিয়ম মেনে খাওয়া ওজন কমার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারবে না যদি না তার সঙ্গে শারীরিক চর্চাও থাকে। সহজ ও সবার জন্য উপযুক্ত ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজের মাঝে দ্রুত হাঁটা অন্যতম। হাঁটার জন্য বাইরে যেতেই হবে এমন কোন কথা নেই। ঘরের ভেতর, বারান্দা কিংবা ছাদেও হাঁটা যাবে সময় মেনে। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের হাঁটা মেটাবলিজম বৃদ্ধি করবে এবং ওজন দ্রুত কমিয়ে আনবে।