কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায় জেনেনিন!

এক সময় মনে করা হত বয়স বাড়লেই মানুষের দেহে নানা রকম কঠিন রোগ বাসা বাঁধে। কিন্তু এখন এই ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। আজকাল অল্প বয়সেই মানুষ বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। এমনকি অল্প বয়সে কিছু রোগের কারণে মৃত্যুও ঘটে। হৃদরোগ তার মধ্যে অন্যতম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোটা পৃথিবীতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। যা কম কিংবা বেশি দুই বয়সেই দেখা দিতে পারে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণ-

আনুষাঙ্গিক সমস্যা

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড এবং বাড়তি ওজনের মতো সমস্যাগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেক গুণ। এই উপসর্গগুলো ডেকে আনে লিভারের সমস্যাও। কিন্তু এই সমস্যাগুলোর জন্য ইচ্ছে মতো ওষুধ খাওয়া চলবে না। মনে রাখা দরকার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বা ওষুধ বন্ধ করা, দুই-ই ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ।

দাঁতের সমস্যা

দাঁতের পরিচর্যা শুধু দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়। ২০১৪ সালে ‘জার্নাল অফ পিরিওডন্টাল রিসার্চ’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সঠিক ভাবে দাঁতের যত্ন নিলে কমে সংবহনতন্ত্রের সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাড়ির রোগের সঙ্গে যুক্ত ব্যাক্টেরিয়া শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং প্রদাহ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

অত্যধিক সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে, যা বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের ঝুঁকি। শুধু খাওয়ার সময় অতিরিক্ত লবণই নয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যুপ, হিমায়িত খাবার, চিপস এবং অন্যান্য লবণাক্ত স্ন্যাকসেও প্রচুর পরিমাণ লবণ থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত নয়।

অপর্যাপ্ত ঘুম

হৃদরোগের অন্যতম বড় অনুঘটক অপর্যাপ্ত ঘুম। শরীর সুস্থ রাখতে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। হৃদযন্ত্র সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী না ঘুমালে, সংবহনতন্ত্র বিশ্রাম পায় না। ঘুমের প্রথম পর্বে হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ কমে যায় (নন-আরইএম পর্যায়)। দ্বিতীয় পর্বে (আরইএম ঘুম) মানুষ যেমন স্বপ্ন দেখে সেই অনুপাতে হৃদস্পন্দন বাড়ে ও কমে। সারা রাত এই পরিবর্তনগুলো হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের অভাব ঘটলে কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে, এটি অতিরিক্ত মানসিক চাপের সমতুল্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাপ্ত বয়স্কদের দিনে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।

হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা না করানো

হৃদযন্ত্রের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেক ক্ষেত্রেই ঠেকাতে পারে হৃদরোগ। কিন্তু বুকে ব্যথা বা শারীরিক অস্বস্তির মতো লক্ষণগুলোকে গ্যাসের সমস্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। তবে সঠিক সময়ে ধরা পড়লে অনেক ক্ষেত্রেই ঝুঁকি কমে হৃদরোগের। বিশেষত পরিবারে যদি হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে নিয়মিত হৃদযন্ত্র ও সংবহনতন্ত্রের পরীক্ষা অবশ্যই দরকার।