শিশুর জন্মের পর মায়ের শরীর ও মনে নানা পরিবর্তন আসে। এমনকি বিভিন্ন কারণে নারীদের ওজনও বেড়ে যায় মা হওয়ার পর।
তবে কখনো কি শুনেছেন, বাবা হওয়ার পর পুরুষের শরীরে কোনো পরিবর্তন এসেছে? বেশিরভাগেরই উত্তর হবে ‘না’।
তবে এক গবেষণা বলছে, বাবা হওয়ার পর পুরুষের শরীরেও পরিবর্তন আসে। তবে তা টের পান না অনেকেই। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পুরুষের শরীরে এ পরিবর্তনের পেছনে দায়ী হলো বিশেষ কিছু হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন।
বিশেষ করে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা নাকি অনেকটাই কমে যায় বাবা হওয়ার পর। এই হরমোন পুরুষের যৌন লক্ষণগুলোকে স্পষ্ট করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়া শরীরের জন্য তেমন খারাপ নয়। বরং বাবা হিসেবে আরও ভালো হতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই হরমোন মানুষকে উত্তেজিত করে তোলে। ফলে হরমোনটির মাত্রা কিছুটা কমে গেলে মানুষ আরও ধৈর্যশীল, শান্ত ও স্থির প্রকৃতির হয়ে ওঠে। সন্তান লালন-পালন করতে এই গুণ অত্যন্ত জরুরি।
আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী লি গেটলার ফিলিপাইনে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এ বিষয়ে গবেষণা চালান। ২১-৬৪ বছর বয়সী ৬২৪ জন অবিবাহিত ও নিঃসন্তান পুরুষের উপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণা চলার সময় ৪৬৫ জন পুরুষ বিয়ে করেন সন্তানের বাবা হন। এরপরই তাদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেন গবেষকরা।
দেখা যায়, অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত ও বাবা হয়েছেন এমন পুরুষদের মধ্যে গড়ে ৩৪ শতাংশ টেস্টোস্টেরন হরমোন কম।
গবেষণার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জানা যায়, একজন পুরুষের প্রথম সন্তানের জন্মের ঠিক আগে ও ঠিক পরে এই হরমোনের মাত্রায় তারতম্য ঘটে।
এমনকি এই হরমোন কমে গেলে অক্সিটোসিন নামক অন্য আরেকটি হরমোনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যাকে লাভ বা ভালোবাসার হরমোনও বলা হয়।
এই হরমোন বেড়ে গেলে মানুষ খুশি অনুভব করেন। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি গবেষণা জানাচ্ছে, শিশুর সঙ্গে খেলেলে বাবার মধ্যে এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।