হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচতে হলে কি কি করণীয় জানেন কি?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে মানুষজনের মৃত্যুর অন্যতম শীর্ষ কারণ হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্‌রোগ। এক-তৃতীয়াংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী এই হৃদ্‌রোগ।

কেন হয় হৃদ্‌রোগ? কীসে বাড়ে এই রোগের ঝুঁকি?

বাংলাদেশেও হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্‌রোগ আজকাল খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রায়শই হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক উপসর্গগুলো আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাথমিক উপসর্গগুলো দেখে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলে ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা বলছে, হৃদ্‌রোগের প্রাথমিক উপসর্গ খেয়াল না করলে তার ফলে কেবল মৃত্যু নয়, বেঁচে থাকলেও অনেক জটিলতা নিয়ে বাঁচতে হয়।

প্রাথমিক উপসর্গ:

* বুকে ব্যথা – চাপ চাপ ব্যথা, বুকের এক পাশে বা পুরো বুক জুড়ে ভারী ব্যথা

* শরীরের অন্য অংশে ব্যথা—মনে হতে পারে ব্যথা শরীরে এক অংশ থেকে অংশে চলে যাচ্ছে, যেমন হতে পারে বুক থেকে হাতে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত বাম হাতে ব্যথা হয়, কিন্তু দুই হাতেই ব্যথা হতে পারে

* মাথা ঘোরা বা ঝিমঝিম করা

* ঘাম হওয়া

* নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা

* বমি ভাব হওয়া

* বুক ধড়ফড় করা বা বিনা কারণে অস্থির লাগা

* সর্দি বা কাশি হওয়া

বেশির ভাগ সময় বুকে ব্যথা খুবই তীব্র হয়, ফলে শরীরের অন্য অংশে ব্যথা অনেকে টের পান না।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, বুকে ব্যথা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা সাধারণ হার্ট অ্যাটাকের এক মাস আগে হয়।

কেন হয় হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্‌রোগ?

আমাদের হৃৎপিণ্ডে যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তা হৃদ্‌যন্ত্রে রক্ত আসে ধমনি দিয়ে। সেটি যখন সরু হয়ে যায়, তখন নালির ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। ফলে নালির ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে হৃদ্‌যন্ত্রের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়, ফলে আর সে অক্সিজেন প্রবাহিত করতে পারে না। হৃৎপিণ্ডের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন প্রবাহিত না হতে পারলেই হার্ট অ্যাটাক হয়।

হার্ট অ্যাটাক হলে কী করব তবে?

* হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর যত সম্ভব দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

* হার্ট অ্যাটাকের পরপরই রোগীকে শক্ত জায়গায় হাত-পা ছড়িয়ে শুইয়ে দিন এবং গায়ের জামা-কাপড় ঢিলেঢালা করে দিন

* হার্ট অ্যাটাকের পর যদি আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তাকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালুর চেষ্টা করুন

* হার্ট অ্যাটাকের পর রোগীর যদি বমি আসে তাহলে তাকে একদিকে কাত করে দিন। যাতে সে সহজেই বমি করতে পারে। এতে ফুসফুসের মতো অঙ্গে বমি ঢুকে পড়া থেকে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তি রক্ষা পাবেন।

হার্ট অ্যাটাক থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে যেভাবে

* খাবার ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে, নিয়মিত হাঁটা-চলা ও ব্যায়াম করতে হবে

* ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে

* ধূমপান বন্ধ করতে হবে

* মাঝে মাঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে