তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য বাড়তি সময় প্রয়োজন হয়।
একদিকে অতিরিক্ত তৈলাক্ততা ত্বকে ব্রণের উপদ্রব তৈরি করে, অন্যদিকে অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক হারায় তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা। তৈলাক্ত ত্বকের ঝামেলা অনেক। তৈলাক্তভাব কমানোর জন্য অয়েল-ফ্রি ফেসওয়াস ব্যবহারে বেশীরভাগ সময় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব হয় না।
বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ একেবারেই করা সম্ভব হয় না। মেকআপ করা গেলেও, কিছুক্ষণ পর থেকেই সমস্যা দেখা দেওয়া শুরু হয়। ত্বকের তৈলাক্ততা কমিয়ে কীভাবে স্বাভাবিক মাত্রায় আনা সম্ভব সেটা জেনে নিন আজকের ফিচার থেকে।
প্রতিদিন মুখ ধুতে হবে দুইবার
ত্বক তৈলাক্ত হলেও বারংবার মুখ ধোয়া যাবে না। এতে ত্বকের স্বাভাবিক ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে যায় ও ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে। চেষ্টা করতে হবে সকালে উঠেই মুখ ভালোভাবে একবার ধুয়ে নিতে। এরপর বাইরে থেকে আসার পর মুখ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। অতিরিক্ত মুখ ধোয়ার ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ও সিবাম কমে যায়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: সানস্ক্রিন ব্যবহারে করণীয়
সপ্তাহে দুই-তিন বার ফেসমাস্ক ব্যবহার করতে হবে
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। যে কারণে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিতে হয় বেশি। চেষ্টা করতে হবে নিজের ত্বকের সাথে মানানসই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ফেসমাস্ক ব্যবহার করার। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই-তিন বার ফেসমাস্ক ব্যবহারে ত্বকের ময়লা গভীর থেকে পরিষ্কার হবে, ত্বকের তৈলাক্তভাব কমে আসবে এবং ত্বক সুস্থ থাকবে।
ব্যবহার করতে হবে মধু
সকল ধরণের ত্বকের সাথে মানিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক উপাদানটির নাম হলো মধু। মধু ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায় ও ত্বক হাইড্রেটেড রাখে। প্রাকৃতিক এই উপাদানের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো ত্বকে ব্রণ তৈরিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রপিয়ানোব্যাকটেরিয়াম (Propionibacterium) ও স্ট্যাফলোকক্কাস (Staphylococcus) ধ্বংস করে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গ্রিন টি টোনার
যেকোন ত্বকের যত্নেই টোনার অন্যতম জরুরি একটি পণ্য। টোনার ত্বকের রোমকূপ ছোট করে ও তেল নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনে। তবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গ্রিন টি টোনার সবচেয়ে উপকারী। গ্রিন টি টোনারে থাকে পলিফেনল (অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট)। যা ত্বকের প্রদাহ ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা কমিয়ে আনে।
আরও পড়ুন: মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে যে নিয়মগুলো অবশ্যই মেনে চলা প্রয়োজন!
ওটস দিয়ে মুখের ত্বক এক্সফলিয়েট করা
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুব জরুরি একটি রুটিন হলো এক্সফলিয়েশন। এক্সফলিয়েশনের ফলে ত্বকের মরা চামড়া, ময়লা, তেল ও ব্যাকটেরিয়া দূর হয় পুরোপুরিভাবে। নিয়মিত এক্সফলিয়েশনের ফলে ত্বকে ব্রণের প্রাদুর্ভাব একেবারেই কমে যায়। মিশ্র ও শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে দুই-একদিন পরপর এক্সফলিয়েট করাই যথেষ্ট। তবে তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক্সফলিয়েট করা প্রয়োজন। এতে ত্বকের তৈলাক্ততা কমে যায় অনেকখানি।
ময়েশ্চারাইজারের কথা ভোলা যাবে না
যদি ভাবেন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজিং এর কোন প্রয়োজন নেই, তবে সেটা খুবই ভুল। তৈলাক্ত ত্বকের বিভিন্ন ধরণের পরিচর্যার কারণে ত্বকের উপরিভাগের অংশ বেশ শুষ্ক হয়ে যায়। এতে করে ত্বক আরও বেশি তেল নিঃসরণ করে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে হবে সুগন্ধিবিহীন ওয়াটার-বেসড ময়েশ্চারাইজার।
এতো সকল নিয়মের মাঝে যে বিষয়টি একেবারেই ভোলা যাবে না সেটা হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। ভাজাপোড়া খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে। ফল ও সবজী খেতে হবে প্রচুর পরিমানে। সাথে প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস জল অবশ্যই পান করতে হবে। পরিচর্যার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ত্বকের ভেতর থেকেই সুস্থতা আনতে সাহায্য করবে।
RS