একরাশ সুন্দর আর ঝলমলে চুল পেতে কে না চায়! কিন্তু চুল সুন্দর রাখতে চাইলেও একের পর এক বাধা চলে আসে। খুশকির সমস্যা, চুলের আগা ফাটা, চুল পড়ে যাওয়া- এমন আরও অনেক সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু বর্তমান ব্যস্ত সময়ে এতদিক সামলে চলার সময়টুকু সবার মেলে না। তাইতো অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। আর চুল হয় মলিন ও রুক্ষ। আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান মিলতে পারে ছোট্ট একটি ক্যাপসুলে। আটটি ফ্যাট সলিউবল ভিটামিনের গ্রুপ দিয়ে গঠিত ভিটামিন ই অ্যান্টি অক্সিডান্টে ভরপুর যা চুলের নানা সমস্যার সমাধান করতে পারে। এটি অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি চুল পড়ার সমস্যায় বিশেষভাবে সমাধান করে।
চুল যাদের পাতলা: অনেকের চুলের ঘনত্ব পাতলা হয়। তারা যদি প্রতিদিন একটি করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খান তাহলে চুল দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ভিটামিন ই চুলের গোড়ায় রক্ত সংবহন উন্নত করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। মাথার ত্বক যদি সুস্থ থাকে তখন স্বাভাবিকভাবেই চুল সুন্দর ও মজবুত হবে।
খুশকি হলে: খুশকির সমস্যায় প্রায় সবাই কম-বেশি ভুগে থাকেন। মূলত আমাদের মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে খুশকি দেখা দেয়। নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে মাথার ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকে এবং সেবামের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এগুলোই খুশকি দূর করতে সহায়তা করে।
হেয়ার মাস্ক হিসেবেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে এক টেবিল চামচ নারিকেল তেলে দুই টেবিল চামচ ভিটামিন ই অয়েল আর এক চা চামচ টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণটি চুলে আর মাথার ত্বকে মেখে দুই ঘণ্টা রাখুন, এরপর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে এভাবে দুইদিন ব্যবহার করুন। খুশকি থেকে মুক্তি মিলবে।
চুলের আগা ফাটা সমস্যায়: আগা ফেটে গেলে তা চুলের বৃদ্ধি ব্যহত করে। কোনো কারণে আমাদের চুলের ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হলে চুলের আগা ফেটে যায়। ভিটামিন ই-র অ্যান্টি অক্সিডান্ট সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে দুই চা চামচ টি ট্রি অয়েল, এক চা চামচ সেডার উড অয়েল, এক চা চামচ আমন্ড অয়েল আর তিন টেবিল চামচ ভিটামিন ই অয়েল মিশিয়ে চুলে আর স্ক্যাল্পে মাখুন। চুলের আগা ফাটা বন্ধ হবে দ্রুতই।
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে: চুল ধীরে ধীরে তার উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে? এর কারণ হলো চুল তার প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ও পুষ্টি পাচ্ছে না। এরকমটা হলে চুলে নিয়মিত মাখুন ভিটামিন ই তেল। আর বাড়তি উপকারিতা পেতে চাইলে এক চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে তারপর ব্যবহার করতে পারেন। অল্প কদিনেই চুল ঝলমলে হয়ে উঠবে।
অকালে চুল পাকলে: চুল পাকার জন্য এখন আর বয়সের দরকার পড়ে না। বরং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা বেড়েই চলেছে। পাকা চুল নিঃসন্দেহে আপনার সৌন্দর্য নষ্ট করে। তাই অকালে চুল পাকলে নিয়মিত ভিটামিন ই তেল মাখুন। সমস্যা কমবে অনেকটাই।
চুল পড়া বন্ধ করতে: চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক। যারা এমন সমস্যায় ভুগছেন তারা ভিটামিন ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। দুই টেবিল চামচ ভিটামিন ই তেলের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে হালকা গরম করুন। এরপর তেলটুকু মাথার ত্বকে ধীরে ধীরে লাগিয়ে নিন। সারারাত রেখে পরদিন শ্যাম্পু করে নিন। চুল পড়া তো কমবেই, সেইসঙ্গে গজাবে নতুন চুলও।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: শ্যাম্পু করার পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন প্রায় সব বিশেষজ্ঞই। কারণ এটি আমাদের চুলের কোমলতা হারাতে দেয় না। তবে শ্যাম্পু শেষে রাসয়নিকযুক্ত কন্ডিশনারের বদলে ব্যবহার করুন ভিটামিন ই। প্রথমে চুলের বাড়তি জল মুছে নিন। এরপর ভিটামিন ই তেল মাথার ত্বকে আর চুলে লাগিয়ে নিন। তেল শুষে গেলে চুল আর একবার ধুয়ে নিন। কোমল আর ঝলমলে চুল পাবেন।