সুন্দর লুকের জন্য জরুরি উপযুক্ত বেস মেক-আপ, পদ্ধতি জানেন তো?

সুন্দর লুক কে না চায়? কিন্তু অনেকসময় ঠিকমতো মেক-আপ না হওয়ার কারণে পুরো সাজটাই মাটি হয়ে যায়। এর জন্য সরকার সঠিক বেস মেক-আপ। সেই নিয়েই বললেন মেক-আপ আর্টিস্ট নবীন দাস।

ময়েশ্চারাইজার

মেক-আপ বেস করার প্রাথমিক শর্ত ভাল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার। মুখটাকে স্মুদ করে নেওয়া। ময়েশ্চারাইজারের ওপর যে কোনও বেস খুব ভাল বসে। অনেকক্ষণ সেট করে। স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বাছতে হবে, যাতে ঘাম না হয়।

কালার কারেক্টর

মেক-আপের শুরুতে লাগবে একটা একটু ডার্ক বেস ও একটা লাইট অর্থাৎ মুখের স্কিনটোনের যে কালার দুটো মিলিয়ে ব্রাশ দিয়ে মুখে বসিয়ে দিতে হবে। কারও ত্বক খুব ফরসা, তাকে যদি স্কিনটোনের তুলনায় হোয়াইট বেস লাগানো হয় তাহলে ত্বক ফ্যাটফেটে সাদা দেখতে লাগে। গাঢ় আর হালকা মিশিয়ে ড্রপ ড্রপ মুখে দিয়ে এবার ব্রাশ বা স্পঞ্জ দিয়ে মিশিয়ে দিলেই ন্যাচরাল লুক আসবে। আঙুল দিয়ে ড্যাব করেও করা যায়, তাতে মেক-আপ বসে ভাল। একটা নর্মাল স্কিনটোন আসে কালার কারেক্টর ব্যবহারের পর। যদি মনে হয়, চোখের কাছে ব্লেন্ডিংটা ঠিকমতো হয়নি, সেক্ষেত্রে আঙুল দিয়ে ড্যাব করে মিশিয়ে দেতে হবে।

কনসিলার

মুখের ত্বকে অনেক সময়ই দাগ থাকে। কারও কালচে ছোপ থাকে, ব্রণর দাগ থাকে, ওপেন পোরসের দাগ থাকে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে কনসিলারের ব্যবহার হয়। কনসিলার আঙুলের ডগা দিয়ে দাগযুক্ত অংশ ডট করে লাগিয়ে আঙুল দিয়েই ব্লেন্ড করে দিতে হবে। সরু পাতলা গোল ব্রাশ দিয়েও ব্লেন্ড করা যায়।

মেকআপ কনট্যুর বা কাটিং বেস

কনসিলারের পর কনট্যুরিং করতে হয়। কনট্যুরিং প্যালেট কসমেটিক স্টোর ও অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায়। কারও হয়তো নাক চাপা বা গাল খুব ভারী, সেক্ষেত্রে কনট্যুরিং করাটা জরুরি। নাকের দু’পাশে ডার্ক শেড দিয়ে দাগ কেটে দেওয়া হয়। এবার ওই দাগ ব্লেন্ড করে দিতে হবে নাকের মাঝের লম্বা অংশে। মুখে যে শেডের বেস প্রথমে দেওয়া হয়েছে তাই দিয়ে একটা হাইলাইট করে দিতে হবে। যার ফলে নাকটা অনেক শার্প লাগবে। গালের ক্ষেত্রেও একইভাবে করতে হবে। চিকবোন একটু টান করলে গালে যে ভাঁজটা পড়ে, সেই ভাঁজে দুটো স্ট্রোক দিয়ে ব্লেন্ড করলে গালে একটা খাঁজ বেরিয়ে আসে। গালের শেপ ভাল আসে। মেক-আপ কনট্যুর স্কিনের চেয়ে দু’শেড ডার্ক হয়। ব্রাউন শেড হলে ভাল হয়। চিকবোন ভারী হলেও কনট্যুর করতে হয়। তারপর ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্যবহার করতে হবে।

ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার

লিকুইড বেস দীর্ঘস্থায়ী ও স্মুদ করার জন্য ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্যবহার করা হয়। লিকুইড বেস বেশ কিছুটা সময় গেলে ফেটে যায়। ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বেস ফাটতে দেয় না, স্কিন স্মুদ রাখে।

প্যানকেক

ইদানীং প্যানকেকের ব্যবহার কমে গিয়েছে, কারণ প্যানকেক খুব চড়া। এখন মুখে নামী কোম্পানির লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়। শুধু গলায় ও হাতে প্যানকেক দেওয়া হয়। মুখের সঙ্গে হাত, গলার স্কিনটোনের যাতে মিল থাকে। নাচের অনুষ্ঠানে বা এমন কোনও পারফরমেন্স, যেখানে বেশ দূর থেকে শিল্পীকে চোখে পড়ার ব্যাপার রয়েছে, তাতে এখনও প্যানকেক দিয়ে মুখে বেস করা হয়। কারণ দূর থেকে তাকে দর্শক ভাল করে চিনতে পারে। প্যানকেক স্পঞ্জ দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে।

প্যানস্টিক

প্যানস্টিক একটু ঘন বেস। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে প্যানস্টিক ভাল অপশন। যেমন শুটিংয়ের ক্ষেত্রে বা বিয়ের কনের ক্ষেত্রেও প্যানস্টিক ব্যবহার করা হয়। চড়া আলোয় দীর্ঘক্ষণ প্যানস্টিক স্টে করে।

ফাউন্ডেশন

ফাউন্ডেশন বেস মুখের জন্য ভাল বেস। ফাউন্ডেশন স্পেশাল অকেশনের জন্য যেমন স্যুটেব্‌ল, তেমনই রোজকার ব্যবহারেও ভাল। হালকা ডট দিয়ে মুখে ফাউন্ডেশন দিয়ে আঙুল বা ব্রাশ দিয়ে ব্লেন্ড করে দিতে হয়। তারপর কমপ্যাক্ট দিলেই বেস কমপ্লিট।

কমপ্যাক্ট

কমপ্যাক্ট হল খুব লাইট ফেস পাউডার। পাউডার বেস বলে এক-দু’বার রি অ্যাপ্লাই করা যায়। দীর্ঘক্ষণ টেকসই হয় না, তবে এখন বাজারে বেশি সময় স্টে করে এমন কমপ্যাক্টও এসে গিয়েছে। পাফ সামান্য জলে ভিজিয়ে কমপ্যাক্টে ড্যাব করে মুখে দিলে ফাউন্ডেশনের কাজ হয়।

মেক-আপ ফিক্সার

লিকুইড ফাউন্ডেশন মুখে লাগিয়ে ব্লেন্ড করে মেক-আপ ফিক্সার স্প্রে করতে হয়। মেক-আপ ফিক্সার অনেকক্ষণ স্টে করে, আর বাড়তি শাইন আসে মুখে।

মেক-আপ প্রাইমার

কারও চোখের কোলে খুব কালচে ছোপ রয়েছে বা ফাটা দাগ রয়েছে, সেটা প্রাইমার দিয়ে ঢেকে ফেলা যায়। এয়ার ব্রাশ মেক-আপ এয়ার ব্রাশ মেকআপ মেশিনের সাহায্যে হয়। স্প্রে পেন্টিং-এর মতো পুরো মুখে স্প্রে করে দিতে হয়। এয়ার ব্রাশ মেক-আপের ক্ষেত্রে কনসিল, কনট্যুর সবটাই স্প্রে করেই করা হয়। এই মেকআপ এখন লেটেস্ট এবং পপুলার। সময় লাগে এক থেকে দেড়ঘণ্টা। দীর্ঘস্থায়ী হয়। তবে এই মেক-আপ তোলাও সময়সাপেক্ষ।