হরমোন হচ্ছে শরীর থেকে নিঃসৃত এক ধরনের রস, যা এক জায়গা থেকে নিঃসৃত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের নানা শারীরবৃত্তীয় কাজে হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, গর্ভধারণও এর মধ্যে একটি।
অনেক হরমোন আছে, যা নারীর গর্ভধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষেরও কিছু হরমোন আছে, যেগুলোর তারতম্যের জন্য অনেক সময় গর্ভধারণ হয় না।
গর্ভধারণের ওপর যেসব হরমোনের প্রভাব ফেলে সেগুলো হলো—
ফলিকল স্টিমুলেটি হরমোন (এফএসএইচ) : এই হরমোন মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডিম্বাশয়ের ডিমের পরিপূর্ণতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেসব নারীর ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা কম থাকে, তাদের (এফএসএইচ) হরমোন বেড়ে যায়।
লুটিনাইজিং হরমোন (এলএইচ) : ওভুলেশনের সময় ডিম ফুটতে এই হরমোন সহায়তা করে।
অ্যান্টি মুলারিয়নে হরমোন (এএমএইচ) : এই হরমোন ওভারির ফলিকল থেকে উৎপন্ন হয়। ডিম্বাশয়ে কতগুলো ডিম আছে তার ধারণা এই হরমোন থেকে পাওয়া যায়। এই হরমোন কমে গেলে ডিমের সংখ্যা কমে গেছে বলে ধারণা পাওয়া যায়।
ইস্ট্রোজেন : এটি হচ্ছে নারীর প্রধান হরমোন, যার জন্য নারীর শারীরিক গঠন তৈরি হয়।
প্রজেস্টেরন : গর্ভাবস্থা বজায় রাখার জন্য এই হরমোন গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রূণের বেড়ে ওঠার পরিবেশ তৈরি করে দেয় এই হরমোন। এই হরমোন কমে গেলে মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে।
থাইরয়েড হরমোন : এই হরমোনের কমবেশির জন্য বাচ্চা ধারণ করা কঠিন হতে পারে। হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের মধ্যে এনে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
প্রলাক্টিন : এই হরমোন বেশি থাকলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে এবং বাচ্চা কনসিভ করতে সমস্যা হতে পারে।
হরমোনের তারতম্যের জন্য বাচ্চা নিতে যে সমস্যা হয়—
♦ ডিম ফুটতে সমস্যা (অ্যানওভুলেশন)
♦ পিসিওএস
♦ প্রলাক্টিন হরমোন বেড়ে যাওয়া
♦ অতিরিক্ত ওজন
পুরুষ হরমোনের কারণে বন্ধ্যত্ব
♦ হাইপোগোনাডিজম বা টেস্টোস্টেরন হরমোন কম থাকা
♦ থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা
♦ ডায়াবেটিস
♦ অতিরিক্ত ওজন
চিকিৎসা
♦ মাসিক নিয়মিতকরণ
♦ ডিম ফুটতে সহায়তা করা
♦ থাইরয়েড হরমোন নরমাল লেভেলে আনা
♦ প্রলাক্টিন হরমোন স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা