চোখ লাফানোও হতে পারে গর্ভধারণের লক্ষণ!

চোখের পাতা কেঁপে ওঠার অনুভূতির সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত। হঠাৎ করেই চোখের পাতা কেঁপে ওঠাকে অনেকেই চোখ লাফানো বলে সম্বোধন করেন।

আবার এ বিষয়কে অনেকেই অশুভ বা খারাপ কোনো লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করেন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, গর্ভধারণেরও লক্ষণ হতে পারে অতিরিক্ত চোখ কাঁপা।

চোখ লাফায় কেন?

চোখের পাতা কেঁপে ওঠার ঘটনাটি তখনই ঘটে যখন চোখের পেশি বা পাতার খিঁচুনি বা নড়াচড়া। যা চাইলেও আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। চিকিৎসকরা একে ব্লেফারোস্পাজম বলেন। এটি আপনার উপরের চোখের পাতায় ঘটে থাকে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখের পাতা কেঁপে ওঠে।

আমেরিকার স্বাস্থ্য পত্রিকা ‘হেলথলাইন’এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় চোখ লাফানোর বেশ কিছু কারণ আছে। জেনে নিন কী কী-

>> অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নারীদের মানসিক চাপ অকেটাই বেড়ে। শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের প্রভাবেই এমনটি ঘটে। ফলে মানসিকভাবে কিছুটা অস্থির, খিটখিটে হয়ে পড়েন নারীরা। এ কারণেও চোখ লাফাতে পারে।

>> গর্ভাবস্থায় শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়া স্বাভাবিক। কারণ দেহে আরেকটা প্রাণ নিয়ে ঘোরাফেরা করা সহজ নয়। তাই এ সময় নারীরা অনেকটাই ক্লান্ত থাকেন। আর চোখ লাফানোর কারণ হতে পারে ক্লান্ত্রি।

>> শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি থাকার কারণেও চোখ লাফাতে পারে। বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্যহীনতা চোখের খিঁচুনির জন্য দায়ী হতে পারে।

ম্যাগনেসিয়াম ৩০০টিরও বেশি এনজাইম সিস্টেমের অংশ, যা শরীরের বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। যার মধ্যে পেশি সংকোচনও আছে। এদিকে সর্বোত্তম স্নায়ু আবেগ সংক্রমণের জন্য পটাসিয়াম প্রয়োজন।

>> প্রতি মিনিটে ১০-২০ বার চোখের পলক ফেলা স্বাভাবিক বিষয়। তবে যখন কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে কেউ চোখ রাখেন, সেক্ষেত্রে চোখের পলক কম পড়ে। আর এ অভ্যাস চোখ শুষ্কতার কারণ হতে পারে।
এছাড়া গর্ভাবস্থায় চোখের শুষ্কভাব বিভিন্ন কারণে বেড়ে যেতে পারে। আর এ কারণে চোখ লাফানোও বাড়তে পারে। তাই চোখের শুষ্কভাব এঢ়াতে এ সময় স্ক্রিনটাইম কমাতে হবে।

>> ক্যাফেইনের কারণে চোখ লাপাতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ক্যাফেইন গ্রহণ এড়িয়ে যেতে হবে।

চোখ লাফানো ছাড়াও গর্ভাবস্থায় চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন নারীরা। যেমন-

>>গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। যা উজ্জ্বল আলো বা রোদের কারণে হতে পারে।

>> ফ্লোটার বা ক্ষুদ্র দাগ দৃষ্টিতে ভেসে বেড়ায়। যারা উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের রোগী গর্ভাবস্থায় তারা চোখে ভাসমান এসব ছোট ছোট দাগ দেখতে পান।

>> অনেকেই গর্ভাবস্থায় দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় ভোগেন। তবে এ সময় দৃষ্টিশক্তির ব্যাঘাত হতে পারে প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। তাই সতর্ক থাকতে হবে।

>> এছাড়া ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যাতেও গর্ভাবস্থায় অনেকেই ভোগেন। আসলে গর্ভাবস্থায় পায়ে যেমন তরল জমে, ঠিক তেমনই চোখেও তরল জমা হতে পারে। ফলে কর্নিয়ার পরিবর্তন হয় ও দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।