শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভারের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে পারে যেভাবে, দেখুন একঝলকে

শরীরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। অনিয়মিত জীবনযাপন ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে অনেকেই লিভারের নানা সমস্যায় ভোগেন। কেউ লিভার সিরোসিস, কেউ আবার ফ্যাটি লিভারসহ নানা ধরনের লিভারের সমস্যায় ভুগছেন।

বিভিন্ন কারণে লিভার অনেক সময় ঠিকমতো তার কাজ সম্পাদন করতে পারে না। ফলে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। অনেক সময় লিভারে চর্বি জমতে শুরু করে। যাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার।

লিভার আমাদের শরীরের পাওয়ার হাউস। সুতরাং লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে শরীরের এনার্জি কমে যাবে, রোগী দুর্বল হয়ে অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠবে। তাই এখন থেকেই লিভারের যত্ন নেওয়া শুরু করুন। এজন্য লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ করা প্রয়োজন।

ডিটক্স বা ফ্লাশ একটি অভিনব শব্দ, যা খাদ্যতালিকার পরিবর্তনকে বোঝায়। অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে লিভারে জমে থাকা চর্বি বা ময়লা দূর করার উপায়কেই লিভার ডিটক্স বা ফ্লাশ বলা হয়।

লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে ডিটক্স পদ্ধতি। কিছু খাবার গ্রহণ এবং বর্জনের মাধ্যমে আপনি সহজেই লিভার পরিষ্কার করতে পারবেন। জেনে নিন লিভার পরিষ্কার করার ৭ উপায়-

>> প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পানি হলো সেরা ফ্লাশিং এজেন্ট। এটি আপনার লিভার ও কিডনি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এজন্য প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করতে হবে। পাশাপাশি ডিটক্স ওয়াটারও পান করতে পারেন। সেক্ষেত্রে শসা, আদার টুকরো, লেবুর স্লাইস ও কিছু পুদিনা পাতা সারারাত রেখে সকালে ওই পানি পান করুন।

>> অতিরিক্ত ওজনের কারণে অনেকেই লিভারের সমস্যায় ভোগেন। এজন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে চর্বির পরিমাণও কমায়। একই সঙ্গে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বা লিভার সিরোসিস (প্রদাহ ও দাগ) থেকেও রক্ষা পাবেন নিয়মিত ব্যায়াম করলে।

>> অত্যাধিক অ্যালকোহল পান করা মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় এই বদাভ্যাস। লিভারের কার্যকারিতা ব্যাহত হয় এর ফলে। যতটা সম্ভব অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।

>> লিভার পরিষ্কার করতে খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন। এজন্য অবশ্যই অর্গানিক শাক-সবজি ও ফল-মূল রাখতে হবে। যা আপনার লিভারকে সুস্থ রাখবে। একই সঙ্গে রসুন, সাইট্রাস ফল, হলুদ, আখরোট, বিট, গাজর, সবুজ চা, আপেল ও অ্যাভোকাডো খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন।

>> অস্বাস্থ্যকর চর্বি ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এতে লিভার দ্রুত পরিষ্কার হবে। অস্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার ফ্যাটি লিভার ও লিভার সিরোসিস হওয়ার মূল কারণ। এর বদলে বাদাম, নারকেল, আখরোট, চিয়া বীজ, ফ্লেক্স বীজ, কুমড়ার বীজ, ডিম এবং চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন) খেতে পারে। এসবে স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে।

>> লিভার ভালো রাখতে হলে দৈনিক চিনি খাওয়ার পরিমাণ ২০-৩০ গ্রাম বা তার কম রাখতে হবে। কারণ লিভার রক্তে চিনির মাত্রা হজম করার জন্য দায়ী। রক্তে অতিরিক্ত চিনি লিভারের কার্যকারিতা নিঃশেষ করে দিতে পারে।

>> সুস্থ লিভারের জন্য মেডিটেশন ও ইয়োগা করাও জরুরি। এর মাধ্যমে আপনার স্ট্রেস ম্যানেজ করুন। এটি আপনার কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। যা আপনার লিভারের উপর চাপ কমাতে পারে।