গরমকালে ডিম খাওয়া কি ঠিক? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এই সময় দাঁড়িয়ে সকলেরই গরমে নাজেহাল অবস্থা। ডাক্তাররা বারবার পরামর্শ দিচ্ছে একেবারেই প্রখর রৌদ্র এড়িয়ে যেতে আর বেশি করে জল পান করতে। তবে এই তীব্র গরমে ডায়েটের দিকেও কিন্তু বিশেষ নজর রাখতে হয়। এমন কোন খাবার কখনোই খাওয়া উচিত নয়, যা আমাদের শরীরকে আরো গরম করে তোলে। এছাড়া হজম শক্তির ব্যাঘাত ঘটায়।

গরমে না খাওয়ার তালিকাটা অনেক বেশি। এই তালিকায় কিন্তু অনেকে ডিমকেও সংযুক্ত করেছে। অনেকেই ভাবে ডিম খেলে নাকি শরীর গরম হয়ে যায়! তাই গরমকালে ডিম না খাওয়াই ভালো। কিন্তু আদেও কি এই কথাটাই সত্যিই? এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত জানলে কলকাতার বিখ্যাত পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল।

তিনি জানান, গরমে ডিম খাওয়া মোটেই খারাপ কাজ নয়। একটি কিংবা দুইটি ডিম তো খাওয়া যেতেই পারে। তবে অনেকেই পাঁচ-ছয়টি ডিম একসাথে খেয়ে থাকে, এটি শরীরের জন্য খুবই খারাপ কারণ দুটি ডিম থেকে প্রায় ১২.১ ক্যালরি প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করে। এমত অবস্থায় অধিক ডিম খেলে প্রোটিন মেটাবলিজম ব্যাঘাত পায় এবং শরীর গরম হয়ে যায়। হজমের মতো সমস্যা দেখা যায়। তবে ডিম খুবই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়োডিন, ফসফরাস প্রভৃতি। ছোট থেকে বড় সকলেই দিনে অন্ততপক্ষে দুটি ডিম খেতে পারে।

ডিম সবসময় পুরোপুরি ভাবে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। এতে কোনরকম সংক্রমণ হয় না। অনেকে অবশ্য ডিমের পোচ বা ভাজা করেও খায়, সে ক্ষেত্রে শরীরে ফ্যাট বাড়তে পারে। এছাড়া অনেকেই হাফ বয়েল ডিম খায়। এই হাফ বয়েল ডিম কিন্তু শরীরে অনেক রকম সংক্রমনের সৃষ্টি করে।

এছাড়া সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ডিম- মাছ-মাংস এই তিনটি কখনোই একসাথে খাওয়া যাবেনা! ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী এতে বিরাট পরিমাণের একটি প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করে, যা হজম শক্তির ব্যাঘাত ঘটায়। তাই দিনের তিন বেলা তিনটি জিনিস ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে। যেমন সকালে ডিম, দুপুরে মাছ ও রাতে মাংস।

তবে গরমে খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি বিশেষ কিছু ক্ষেত্রেও নজর রাখতে হবে সাধারণ মানুষকে। যেমন অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি বেশি পরিমাণে জল পান করতে হবে। যে কোন খাবার খেলে যতই শরীর গরম হোক না কেন, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় থাকা খুবই প্রয়োজনীয়। এছাড়া জলের পাশাপাশি ওআরএস এবং ডাবের জল খাওয়া যেতে পারে এই গরমে।