এই গরমে বিদ্যুৎ বিল কমানোর কিছু টিপস জেনেনিন আপনিও

গরমের সময়ে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। কারণ এসময় ফ্যান, এসি, কুলার বেশি ব্যবহার করা হয়। যে কারণে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলও আসে বড় অঙ্কের। বিদ্যুৎ বেশি খরচ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো কিছু উপায় না জানা। আমরা আরেকটু কৌশলী হলেই বিদ্যুৎ খরচ বাঁচানো যাবে অনেকটাই। সেজন্য বড় কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখলেই এটি সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ওয়াশিং মেশিনের ক্ষেত্রে

অনেকেই এখন সময় বাঁচাতে কিংবা ঝামেলা এড়াতে বাড়িতে ওয়াশিং মেশিন রাখেন। এতে কাপড় পরিষ্কার করা সহজ হলেও বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তাই সব ধরনের কাপড় ওয়াশিং মেশিনে না দিয়ে শুধুমাত্র ভারী ও বেশি ময়লা কাপড় ধোয়ার জন্য ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করুন। যেসব কাপড় হাতেই ধোয়া যায়, সেগুলো ওয়াশিং মেশিনে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন নয়, চেষ্টা করুন সপ্তাহে একদিন ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে। এতে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচবে।

এসির ক্ষেত্রে করণীয়

যাদের বাড়িতে এসি আছে, গরমে তাদের বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। কারণ এসময় গরম তাড়াতে এসি বেশি ব্যবহার করা হয়। যেমনটা শীতের দিনে প্রয়োজন পড়ে না। এরকম ক্ষেত্রে এসি ব্যবহারের আগে ভালোভাবে সার্ভিসিং করিয়ে এবং তাপমাত্রা সেট করে নিন। এতে বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হবে অনেকটাই। পাশাপাশি এসিতে টাইমার লাগিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে পারেন। কারণ এসি চালিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার ঘণ্টা দুই পরেই ঘর শীতল হয়ে যায়। এদিকে সারারাত এসি চললে বিল তো বেশি আসবেই! সেজন্য টাইমার সেট করে নিতে পারেন। এতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল থেকে মুক্তি পাবেন।

ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা

অনেক সময় ঘরে ঠিকভাবে আলো প্রবেশ করতে না পারলে দিনের বেলাতেও বাতি জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এতে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায় বিদ্যুৎ খরচ। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত যাতে ঘরে ঠিকভাবে আলো প্রবেশ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করুন। সন্ধ্যার পরে জানালা খুলে রাখলে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস আসে। এতে এসি বা কুলার ব্যবহারের প্রয়োজন কম হয়।

বিদ্যুতের ইউনিট গুনে রাখুন

প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার পরে বিলের কাগজটি সংরক্ষণ করুন। কত ইউনিট খরচ হয়েছে তা দেখুন। এরপর কোনো মাসে এর থেকে বেশি বা কম ইউনিট খরচ হলে তার কারণ খুঁজে দেখুন। যদি পুরো মাস বাড়িতে থাকার পরেও বিল কম আসে তবে খেয়াল করুন কোন কোন ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়েছে। সেভাবেই বিদ্যুৎ খরচের চেষ্টা করুন।

মোটা পর্দা ব্যবহার করুন

গরমে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। যে কারণে এসি কিংবা কুলার ব্যবহার করলে তা ঘর ঠান্ডা করার জন্য বেশি সময় নেয়। গরমে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হওয়ার এটিও একটি কারণ। এক্ষেত্রে ঘরের দরজা-জানালায় মোটা পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। এতে বাইরের রোদ ও গরম বাতাস ঘরে কম প্রবেশ করবে। এসি বা কুলার ব্যবহার করে ঘর ঠান্ডা করতেও বেশি সময় লাগবে না।

অদৃশ্য খরচ বাঁচান

অনেক সময় বেখেয়ালে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়, যেগুলো আমরা বুঝতে পারি না। হয়তো টিভি কেউ দেখছে না কিন্তু সেটি চালিয়ে রাখা হয়েছে। গান না শুনলেও মিউজিক সিস্টেম ঠিকই চলছে। এরকমটা ফ্যান কিংবা বাতির ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। প্রতিদিন একটু একটু করে খরচ শেষে বিদ্যুৎ বিল কিন্তু বেশিই আসে। এই বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল করুন।

নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করুন

অনেকেই ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার করেন না। এতে খাবারে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর ভয় তো থাকেই, সেইসঙ্গে বাড়ে বিদ্যুৎ খরচ। এর কারণ হলো, ফ্রিজ অপরিষ্কার থাকলে তা শীতল হতে বেশি সময় নেয়। এতে করে বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে এবং বিলও বেশি আসে। তাই নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করুন।

নষ্ট সুইচ ঠিক করুন

অনেক সময় বাড়িতে সুইচ নষ্ট হয়ে গেলে বাতি জ্বালানো কিংবা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। তাই ঝামেলা এড়াতে অনেকে বাতি জ্বালিয়েই রাখেন। এমনটা করা যাবে না। কারণ এতে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাবে। তাই কিছুটা সময় নিয়ে সুইচ সারানোর বা নতুন সুইচ লাগানোর ব্যবস্থা করুন। এতে বিদ্যুৎ খরচ কমবে।

ফাইভ স্টার অ্যাপলায়েন্স

ইলেক্ট্রনিক বিভিন্ন জিনিস যেমন ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, এসি, ইনভার্টার বা গিজার কেনার আগে খেয়াল করুন যেন সেগুলো ফাইভ স্টার অ্যাপলায়েন্স হয়। স্টারের সংখ্যা বেশি থাকার মানে হলো, এগুলো ব্যবহারে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে। এগুলোর মূল্য কিছুটা বেশি হলেও সুফল অনেক বেশি।