মানুষের বয়স বাড়তেই শ্রবণশক্তিতে পরিবর্তন আসে। তবে হঠাৎ করেই কিন্তু শ্রবণশক্তি কমে যায় না। ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করে। এজন্য অনেকেই তা টের পান না। যদিও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়, যা অনেকেই বুঝতে পারেন না।
তবে বয়স বাড়লে এই লক্ষণগুলোতে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক অবস্থায় এ সমস্যার চিকিৎসা করা না হলে ব্যক্তির মধ্যে বিষণ্নতা, বিচ্ছিন্ন বোধ ও পরে স্মৃতিশক্তির সমস্যা দেখা দেয়।
তাই কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক শ্রবণশক্তি হারানোর ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ-
১. শিশুদের কণ্ঠস্বর কি আপনি অস্পষ্ট শোনেন? বার্ধক্যের কারণে অভ্যন্তরীণ কানের অঙ্গ উচ্চ পিচের শব্দগুলো শনাক্তে প্রথমে ব্যর্থ হয়। এর ফলে শিশু ও নারীদের কণ্ঠস্বর শোনা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি সূর্যাস্তের সময় পাখির কিচিরমিচিরের শব্দও কানে না আসার লক্ষণ কিন্তু মোটেও সুবিধার নয়।
২. কোলাহলপূর্ণ কোনো জায়গায় কারও সঙ্গে কথোপকথনে কি আপনি অমনযোগী হয়ে পড়েন? যেমন শপিং মল কিংবা রেস্তোরার ব্যাকগ্রাউন্ডের আওয়াজ সাধারণত কম-পিচ হয়।
এ কারণে এমন শব্দ আপনার কাছে এফ বা এস এর মতো শোনাতে পারে। আপনার যদি উচ্চ শব্দ শুনতে সমস্যা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি আশেপাশের মানুষের কথার চেয়ে শোরগোল বেশি শুনবেন। এমন সমস্যা হলে আজ থেকেই সতর্ক থাকুন।
৩. কারো কথা ধরতে না পারা কিংবা হঠাৎ করেই কারো কথা বুঝতে না পারার কারণ হতে পারে শ্রবণশক্তি হারানোর প্রাথমিক এক লক্ষণ। বিশেষ করে যখন একসময়ে একাধিক ব্যক্তি কথা বলে তখন যদি আপনি কথাগুলো সঠিকভাবে শুনতে না পান তাহলে দ্রুত অডিওলজিস্টের পরামর্শ নিন।
৪. আপনার কি মনে হয়, কানের মধ্যে মোম বা তরল আটকে আছে? এমন অবস্থায় চিকিৎসকের দ্বারা পরীক্ষার পরও যখন জানা যায় কান পরিষ্কার তখন বুঝতে হবে আপনার শ্রবণশক্তি কমতে শুরু করেছে।
৫. আপনি আগে টিভিতে যে ভলিউমে শব্দ শুনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন, এখন কি তার চেয়েও বেশি ভলিউম বাড়াতে হচ্ছে? কিংবা টেলিভিশনের যে কোনো অনুষ্ঠানে কথার চেয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড বা বেস টোনগুলো ভালো শুনতে পান? এর অর্থ হলো আপনার শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করার সময় এসেছে।
আজ ৩ মার্চ বিশ্ব শ্রবণ দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগে বরাবরের মতো এবারো দিবসটি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। ‘জীবনের জন্য শুনুন, যত্ন সহকারে শুনুন’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ২০০৭ সালের এই দিনে প্রথমবারের মতো পালিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার কেয়ার ডে’ বা আন্তর্জাতিক কর্ণ যত্ন দিবস।
কানের বহিরাংশ না বহিকর্ণ দেখতে ইংরেজি সংখ্যা ৩ বা থ্রি’র মতো। তাই ইংরেজি বছরের তৃতীয় মাস অর্থাৎ মার্চ মাসের তৃতীয় দিনকে বিশ্ব কানের যত্ন দিবস হিসেবে পালন করার জন্য বলা হয়েছে।