জীবনে সফল হতে চাইলে ৮ শ্রেণির মানুষকে এড়িয়ে চলুন : গবেষণা

যেসব নেতিবাচক লোকেরা আপনাকে পিছন থেকে টেনে ধরে এবং আপনার ওজন কমিয়ে দেয় তাদেরকে জীবন থেকে বিদায় করে দিন। এরা হতে পারে সহকর্মী, বন্ধু বা পরিবারের সদস্য। এদের সঙ্গে একটা সীমানা দেয়াল টেনে নিন বা জীবন থেকে পুরোপুরি ত্যাগ করুন। কাজটি হয়তো কঠিন হতে পারে। কিন্তু এটা করলেই আপনি সফল হবেন।

আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল ৮ শ্রেণির মানুষ সম্পর্কে:

১. যারা আপনাকে নিচে নামিয়ে রাখে:

আপনার জীবনে যারা থাকবে তাদের উচিৎ আপনাকে ওপরের দিকে টেনে তোলা এবং আপনার অর্জনগুলোকে উদযাপন করা, তাতে ছিদ্র তৈরি করা নয়। কিন্তু এমন কিছু লোক আছে যারা আপনার ভালো খবরগুলোর মধ্যেও নেতিবাচক বিষয় খুঁজে বের করবে। যেমন, আপনার হয়তো বেতন বেড়েছে। কিন্তু এরা বলবে, আপনি আরো বেশি পাওয়ার যোগ্য। আপনাকে কম দেওয়া হচ্ছে। এদের কথা শুনে মনে হবে এরা বুঝি আপনার ভালো চায়। কিন্তু না, এরা আসলে ভণ্ড। শুভাকাঙ্খীর ছদ্মবেশে এরা আসলে আপনার মধ্যে নেগেটিভ চিন্তা ঢুকিয়ে দিতে চান।

২. যারা আপনার মধ্যে নিজেকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে:

বাস্তবতা সম্পর্কে আপনার যে বুঝ আছে তাকে এরা আক্রমণ, অবমূল্যায়ন বা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে এবং আপনার মধ্যে নিজের সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। এর মধ্য দিয়ে এরা আপনার ওপর ছড়ি ঘুরানোর চেষ্টা করবে। এরা শুধু আপনাকে দিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করবে।

এদের কথা ও কাজে মিল থাকে না। এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আপনাকে বিভ্রান্ত করবে। এরা আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে যে আপনি নিজেই সমস্যা। এবং অন্যদেরকে আপনার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিবে। এরা অনেক সময় বুঝেনা কী করেছে। তবে বুঝলেও কোনো পরোয়া করে না। যতক্ষণ পর্যন্ত এরা নিজেদের কাজের দায় স্বীকার না করছে ততক্ষণ এদের এড়িয়ে চলুন।

৩. যারা আপনাকে শুধু নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়:

এরা আপনার সময়, শক্তি এবং সম্পদ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবে। কিন্তু আপনার নিজের চাওয়া বা প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিবে না। আর এরা আপনাকে কিছু দিলেও তা দিবে শুধু আপনি যেন তাদেরকে ছেড়ে চলে না যান সে জন্য এবং ভবিষ্যতে আপনাকে যেনো কাজে লাগানো যায়। এরা সাধারণত পছন্দনীয় এবং বেশ আকর্ষণ ক্ষমতাসম্পন্ন টাইপের মানুষ হয়ে থাকেন। এর নিজেদের সুবিধা আদায় করে নেওয়ার জন্য আপনাকে নিজের সম্পর্কে মূল্যবান হওয়ার অনুভূতি এনে দিবে। এবং ভালোবাসায় সিক্ত করবে। কিন্তু প্রয়োজন ফুরালে আপনাকে ফেলে রেখে যাবে। তখন আপনার মধ্যে প্রত্যাখ্যাত হওয়া, নিরাপত্তাহীনতা এবং মূল্যহীনতার অনুভূতি আসবে।

৪. অকার্যকর পারিবারিক সদস্য:

আপনার কাছের কোনো মানুষও যদি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেন এবং মাদকাসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সহযোগিতা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান তাহলে তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে দেখার এখনই সময়। কারণ এরা নিজেরা তো রসাতলে যাবেই সাথে আপনাকেও টেনে নামাবে। এরা শুধু আপনার ওপর সুবিধা নিবে এবং ব্যবহার করবে। কিন্তু আপনাকে সম্মান করবে না।

৫. যে বন্ধুরা বোঝা হয়ে উঠেছে:

বন্ধুত্ব হওয়া উচিত পারস্পরিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ। যদি তা না হয় তাহলে এখনই সময় এমন বন্ধুকের ত্যাগ করার। আপনার যদি এমন কোনো বন্ধু থাকে যারা আপনার কোনো কাজে না লেগে বরং বোঝা হয়ে উঠেছে, অথবা যারা শুধু নিজের ব্যাপারেই বলতে আগ্রহী বা অতিবেশি সমালোচক অথবা নেতিবাচক তাহলে এখনই তাকে ত্যাগ করুন।

৬. যারা শুধু আপনার দোষ ধরে:

এরা সারাক্ষণই শুধু আপনার দোষ ধরবে এবং আপনার প্রতিটি ভুলের খতিয়ান রাখবে। যাতে ভবিষ্যতে সেসব আপনার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা যায়। এরা শুধু আপনি তাদের জন্য কখন কী করেননি, বা তাদেরকে সমস্যায় ফেলেছেন বা কী ভুলভাবে করেছেন সেসব নিয়ে কথা বলবে। এবং আপনাকে ছোট করবে। কিন্তু এরা নিজের কোনো কাজের দায় নিবে না।

৭. অতি সমালোচক:

আমাদের কেউই নিখুঁত নয়। এজন্য আমরা প্রায়ই কোনো খাঁটি বন্ধুকে আমাদের দুর্বলতাগুলো সততার সঙ্গে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলি। কিন্তু যারা সমসময়ই আপনার সমালোচনা করবে এরা কখনো খাঁটি বন্ধু নয়। এরা আপনি যা কিছুই করেন না কেন তাতেই খুঁত ধরবে। এরা কখনো আপনার প্রতি যত্ন বা ভালোবাসা থেকে এসব করেনা বরং দোষ চাপানো এবং অভিযোগ করার জন্য করে। এরা আপনাকে বুঝাতে চাইবে আপনিই সমস্যা। এ ধরনের মানুষদের অনেক সময় আত্মবিশ্বাস কম থাকে। এবং নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার বোধগুলো অন্যদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়।

৮. জীবন সঙ্গীর ক্ষেত্রে সতর্কতা:

বিষাক্ত রোমান্টিক সম্পর্ক শেষ করা হয়তো একটু কঠিনও হতে পারে। কিন্তু এ ধরনের লোককে নিজের জীবন থেকে বিদায় করে দেওয়া আপনার জন্য অনেক সময় সবচেয়ে সেরা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে।

কোনো সম্পর্কে যদি মিথ্যা, টাকা-পয়সার সমস্যা বা মাদক সেবন জনিত নিপীড়ন, সহিংসতা, পুরোনো সম্পর্কজনিত সমস্যা, অপরাধ রেকর্ড, বেআইনী কাজ করা এবং মাদক সেবনের মতো সমস্যা থাকে তাহলে কোনো অজুহাত বা পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞায় বিশ্বাস না করে বরং যত দ্রুত সম্ভব তা থেকে বের হয়ে আসুন।