সারা দিনের কাজের শেষে শরীর অবসন্ন। ক্লান্তির মধ্যে আলাদাভাবে অনুভব করলেন পা দুটো ব্যথায় টনটন করছে। অনেকে বলেন পা চাবাচ্ছে। কিংবা সকালে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করলেন, একটা পায়ে বেশ ব্যথা। কারও কারও সারা দিন ধরেই থাকতে পারে এই ব্যথা। আবার থেমে থেমেও হতে পারে ব্যথা। পায়ের ব্যথার আছে নানা ধরন, নানা কারণ।
বেশি হাঁটার জন্য ব্যথা বাড়তে পারে; বিশ্রামে তা সেরেও যায়। পায়ে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারণেও ব্যথা হয়। পায়ে আঘাত লাগার কারণেও ব্যথা হতে পারে। আবার মেরুদণ্ডের নানা রোগেও পায়ে ব্যথা হয়। পায়ের চামড়ার নিচের নরম অংশ, হাড়, পেশি কিংবা জয়েন্টের বিভিন্ন রোগেই পায়ে ব্যথা হতে পারে।
করণীয়
ছোটখাটো ব্যথার চিকিৎসা শুরু করতে পারেন ঘরেই—
- পায়ে ব্যথা এবং সামান্য ফোলা থাকলে বিশ্রাম নিন। শোয়ার সময় পায়ের নিচে একটা বালিশ দিয়ে নিন।
- বসে কাজ করার সময়ও পা খানিকটা উঁচুতে রাখুন। এ ক্ষেত্রে ছোট টুল আপনার কাজে আসবে।
- ব্যথার জায়গাটায় আরাম পেতে উষ্ণতার সাহায্য নিন। গরম পানির ব্যাগ কিংবা গরম কাপড় কাজে লাগাতে পারেন। তবে যেভাবেই উত্তাপ নেওয়া হোক না কেন, খুব বেশি সময় নেওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ ১৫-২০ মিনিট করে সারা দিনে ২-৩ বার। উষ্ণতা নেওয়ার জন্য খুব বেশি উত্তপ্ত কিছু ব্যবহার করবেন না। এতে সাময়িক আরাম লাগলেও ত্বক পুড়ে যেতে পারে।
- মেনথল কিংবা ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম মিশ্রিত মলম লাগাতে পারেন দুই বেলা।
- প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন।
কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না হলে চিকিৎসকের কাছে তো যাবেনই। তবে কিছু ক্ষেত্রে আবার ঘরোয়া চিকিৎসায় সময়ক্ষেপণ করাটা বোকামি। জেনে নিন, কোন পরিস্থিতিতে আগেভাগেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে—
- পা ফ্যাকাশে দেখালে বা শরীরের অন্যান্য অংশের চাইতে ঠান্ডা অনুভব করলে।
- দুই পা ফুলে গেলে।
- দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর পায়ের পেছনের পেশি (কাফ) ব্যথা হলে।
- হাঁটার সময় পা ব্যথা হলে।
- পায়ের শিরা ফুলে গিয়ে ব্যথা হলে।
- মেরুদণ্ডের দিক থেকে ব্যথা পায়ের দিকে নেমে আসছে বলে মনে হলে।
আরও যা জানা জরুরি
কিছু ক্ষেত্রে জরুরিভাবে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়—
- ব্যথায় পা ফেলতে না পারলে কিংবা পায়ে ভর দিতে না পারলে।
- পা ফোলার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হলে কিংবা শোয়ার সময় শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা অনুভব করলে।
- পায়ে আঘাত পেলে।
- ব্যথার জায়গাটা লালচে হয়ে গেলে, জ্বর চলে এলে বা ওই জায়গার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে, কিংবা জায়গাটা স্পর্শ করলেই তীব্র ব্যথা অনুভব করলে।