তেলাপিয়া মাছ বিষাক্ত নয়, তবে কি বলছে গবেষণায়! যা জানা জরুরি

দূষিত মাছ খাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক নারী তার চার হাত-পা হারিয়েছেন—এ খবর দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওই নারীর বন্ধুরা জানিয়েছেন, তিনি ভালো করে রান্না না করে তেলাপিয়া মাছ খেয়েছিলেন। এমন সংবাদে অনেকের মনে হতে পারে, তেলাপিয়া মাছটিই হয়তো বিষাক্ত।

এই ভুল বার্তা নিম্নবিত্ত মানুষের দৈনন্দিন প্রোটিন গ্রহণে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে যেকোনো মাছ বা সি-ফুড থেকেই এই ধরনের মারাত্মক খাদ্য বিষক্রিয়া হতে পারে।

‘ভিব্রিও ভালনিফিকস’ ব্যাকটেরিয়া পানিতে থাকে, যা মানুষের দেহে সংক্রমিত হলে জীবনহানিও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজার মানুষ এই ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হন। ঠাণ্ডা পানিতে এটি বংশ বিস্তার করতে পারে না।

যে পানিতে ভিব্রিও ভালনিফিকস থাকে, সেখানে থাকা মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর শরীরেও এটি থাকে। জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর বা জীবনহানির কারণ না হলেও এটি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

কীভাবে ছড়ায়

কাঁচা, অর্ধসিদ্ধ বা কম রান্না করা মাছ বা সি-ফুড খাওয়ার মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে ছড়াতে পারে। সাধারণত শেলফিস ও ওয়েস্টার থেকেই এই সংক্রমণ বেশি হয়।

এ ছাড়া, পানি থেকে ত্বকের ক্ষত দিয়েও সরাসরি শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ব্যাকটেরিয়া।

লক্ষণ

ভিব্রিও ভালনিফিকস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে খাওয়ার পর বমি, পাতলা পায়খানা, তীব্র পেটব্যথা ও জ্বর হয়ে থাকে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণ এগুলো।

ত্বক সংক্রমিত হলে আক্রান্ত স্থান লালচে হয়ে ব্যথা, গরম অনুভূতি, ফুলে কালচে হয়ে যেতে পারে।

সংক্রমণ রক্তে ছড়িয়ে পড়লে জীবনহানির শঙ্কা তৈরি হয়। সাধারণত যাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা লিভারের রোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।

রক্তনালীতে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা ও গ্যাংরিন হতে পারে। এমন রোগীদের সেপটিক শকে মৃত্যু হয়ে থাকে।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

১. মাছ বা সি-ফুড কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ অবস্থায় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. পানিতে নামার পর ত্বকের কোনো স্থানে লালচে, ফুলে যাওয়া, ব্যথা ইত্যাদি অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৩. ত্বকে ক্ষত থাকলে পুকুর, নদী বা সমুদ্রে নামা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. মাছ বা সি-ফুড খাওয়ার পর উল্লেখিত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।