প্রতিদিন আপনার জন্য ঠিক কতটুকু জল খাওয়া উচিত, জেনেনিন

জলকে জীবন বলা হলেও কোনও কোনও সময় জল পান করা একেবারেই ভাল নয়। আসলে ভুল সময় জল পান করলে দেহের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হয়, যার প্রভাবে শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। জল শুধু আমাদের তেষ্টা মেটায় না, সেই সঙ্গে শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রাখে, খিদে কমায় এবং অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করে ফেলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তবে কিছু কিছু সময় জল খাওয়া মাত্র একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে। যেমন ধরুন খাওয়ার সময় জল পান একেবারেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। এমনটা করলে হজমে সহায়ক এনজাইম এবং অ্যাসিডগুলোর কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। দেখা দেয় বদহজমের মতো সমস্যা।

এখানেই শেষ নয়, ভুল সময় জল খেলে শরীরের আরও নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। জেনে নিন কোন কোন সময় জল পান করা উচিত, আর কোন কোন সময় নয়। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে জল পান করা উচিত নয়, যেমন ধরুন…

১. ভারি খাবার খাওয়া পরে জল নয়: ভারি খাবার, যেমন ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ অথবা ডিনারের আগে জল খেতে পারেন, কিন্তু পরে একবারেই নয়। আর খেতে খেতে জল খাওয়া তো একবারেই চলবে না। প্রসঙ্গত, খাবার খাওয়ার আগে অল্প করে জল পান চলতে পারে,বেশি করে খেলে কিন্তু খাবার খেতে পারবেন না। সেই সঙ্গে শরীর অস্বস্তি করার মতো লক্ষণও দেখা যেতে পারে।

২. তৃষ্ণা না পেলে জল পান নয়: শরীর ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু মাত্রতিরিক্ত পরিমাণে জল খেলে শরীরে লবনের ভারসাম্য বিগড়ে গিয়ে নানা ধরনের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৩. ফ্লেবার পানীয় নয়: বিভিন্ন ফ্লেবারের জল খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এমনটা করলে তেষ্টা মেটার সঙ্গে সঙ্গে খিদেও বেড়ে যায়। তাই তো সব সময় সাধারণ জল পান করাই ভাল। প্রসঙ্গত, এইসব ফ্লেবার জল ক্যালরির মাত্রা খুব বেশি থাকে। আর বেশি মাত্রায় ক্যালরি যে শরীরের পক্ষে ভাল নয়, তা তো সবাই জানা। তাই না!

৪. প্রস্রাব পরিষ্কার হলে: যখন দেখবেন প্রস্রাব হলুদ হচ্ছে না, তখন বুঝবেন আপনার শরীরের জলের প্রয়োজন নেই। আসলে প্রস্রাব হলুদ হওয়া মানেই শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কিন্তু জলের ভারসাম্য টিক থাকাকালীন যদি আপনি অনবরত জল পান করে যান তাহলে উলটো ফল হতে পারে কিন্তু!

৫. শরীরচর্চার করার পরে সঙ্গে সঙ্গে জল পান করবেন না: হালকা এক্সারসাইজের পর অল্প করে জল খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ইনটেন্স ওয়ার্কআউটের পর জল পান একেবারেই উচিত নয়। আসলে শরীরচর্চা করার সময় ঘামের সঙ্গে অনেক পরিমাণে মিনারেল বেরিয়ে যায়। তাই এই ঘাটতি মেটাতে শরীরচর্চার পর ডাবের জল অথবা অন্য়ান্য় এনার্জি ড্রিঙ্ক খাওয়া উচিত, জল একেবারেই নয়। প্রসঙ্গত, এই সময় জল খেলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয় কিন্তু। এখন প্রশ্ন হল কোন কোন সময় জল পান করলে শরীরের উপকার হয়?

৬. ঘুম থেকে উঠেই জল পান করতে হবে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে সকাল ঘুম থেকে উঠেই ১-২ গ্লাস জল পান করলে শরীরের ভেতর বেশ কিছু পরিবর্তন হয়, যার প্রভাবে দেহের কর্মক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। ফলে ছোট-বড় নানা রোগে আত্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

৭. প্রতিটি মিলের আগে জল পান জরুরি: খাওয়ার আগে এক গ্লাস জল পান করলে পেট অনেকটা ভরে যায়। ফলে অতিরিক্তি খাবার খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা যায় কমে। তাই যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তায় রয়েছেন, তারা এই নিয়মটি যদি মেনে চলতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার মিলতে পারে।

৮. সংক্রমণ থেকে বাঁচতে জল পান জরুরি: বাড়িতে কি অনেকেই ভাইরাল ফিবারে আক্রান্ত? তাহলে বন্ধু সুস্থ থাকতে বেশি মাত্রায় জল পান জরুরি। কারণ বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে শরীরে জলের মাত্রা যত বাড়তে থাকে, তত প্রস্রাবের মাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে দেহের অন্দরে কোনও ধরনের ক্ষতিকর জীবণু বাসা বাঁধার সুযোগ পায় না। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত ৩-৪ লিটার জল পান করতে ভুলবেন না যেন