সময়ের সঙ্গে আমাদের ব্যস্ততা বাড়ছে। ঘড়ি ধরে খাওয়া কিংবা ঘুমানো সম্ভব হয় না অনেকেরই। গবেষকরা বলছেন, ছন্দহীন জীবনপদ্ধতি ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপদ। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের সাবধান না হয়ে উপায় নেই।
নতুন একটি গবেষণা বলছে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা দিনের যে সময়টায় নির্দিষ্ট খাবার খান, তা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এ জন্য দিনের শেষ দিকে কার্বোহাইড্রেট ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এতে হার্টের স্বাস্থ্য থাকে ভালো।
দ্য জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম-এ সম্প্রতি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ হয়।
এতে বলা হয়েছে, খাবারের সময়কাল জৈবিক ঘড়ির (বায়োলজিক্যাল ক্লক) সঙ্গে মিল রেখে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। জৈবিক ঘড়ি হলো একটি প্রাকৃতিক ও অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া, এটি ঘুমের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ফিরে ফিরে আসে। আর এ কারণে দিনের বিভিন্ন সময়ে নির্দিষ্ট খাবার খাওয়া হলে ডায়াবেটিস আক্রান্তদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে।
গবেষকরা জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরীক্ষার সমীক্ষা থেকে চার হাজারের বেশি ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির হৃদরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকির তথ্য বিশ্লেষণ করেন।
এতে দেখা গেছে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি যদি সকালে আলু বা স্টার্চযুক্ত শাকসবজি খান, দুপুরে হোল গ্রেইন ফুড, দুধ এবং সন্ধ্যা বা রাতে গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেমন সবুজ শাক ও ব্রকলি খান তবে তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক কমে আসে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা সন্ধ্যা বা রাতে প্রচুর প্রক্রিয়াজাত মাংস খান তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।
চীনের হারবিন মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গবেষণা দলের সদস্য কিংগ্রাও সং বলেন, ‘লক্ষ করেছি যেসব ব্যক্তির ডায়াবেটিস রয়েছে তারা সকালে আলু, দুপুরে হোল গ্রেইন, সন্ধ্যায় সবুজ শাক, দুধ খেলে এবং সন্ধ্যায় প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমালে বেশি দিন বাঁচেন।’
ডায়াবেটিসের জন্য পুষ্টিবিষয়ক নির্দেশিকার পাশাপাশি খাবারের সঠিক সময় ও পরিমাণের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে বলেও জানান কিংগ্রাও সং।