পা দেখেই বুঝে নিন লিভারের সমস্যায় ভুগছেন কি না? জেনেনিন পদ্ধতিটি

লিভার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্তপ্রবাহ থেকে ক্ষতিকারক পদার্থগুলো অপসারণ করে, ওষুধ ও অন্যান্য রাসায়নিকও বিপাক করতে সাহায্য করে।

এছাড়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে গ্লুকোজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করে এমনকি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে লিভার।

এ কারণে যখন লিভারে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তখন সেটি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দেয়।

লিভারের সমস্যা লক্ষণীয় ও উপসর্গহীন উভয়ই হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্যাটি লিভার রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণীয় লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে না।

তবে অসুস্থতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। বিশেষ করে পায়ে কিছু লক্ষণ দেখলে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। যেমন-

পা ফোলা ও ব্যথা

পায়ে ব্যথা লিভার রোগের একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। যখন লিভার সঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন অতিরিক্ত তরল ও টক্সিন নিচের শরীরে জমতে শুরু করে।

এর থেকেই পেরিফেরাল এডিমার সৃষ্টি হয়। এছাড়া কিছু লিভারের রোগ যেমন- সিরোসিস, পোর্টাল হাইপারটেনশন নামক অবস্থার কারণ হতে পারে, যা পায়ে ও পায়ে ভেরিকোজ শিরা গঠনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এ কারণে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।

পায়ে চুলকানি

পায়ের চুলকানি লিভার রোগের অন্যতম এক লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে কোলেস্ট্যাটিক লিভারের রোগ যেমন- প্রাইমারি বিলিয়ারি সিরোসিস (পিবিসি) ও প্রাইমারি স্কলেরোজিং কোলাঞ্জাইটিসের (পিএসসি) ক্ষেত্রে পায়ের চুলকানি বাড়তে পারে।

এ অবস্থার কারণে লিভারের পিত্ত নালিগুলো ব্লক বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শরীরে পিত্ত জমা হতে পারে। এই বিল্ড আপ তীব্র চুলকানি হতে পারে, বিশেষ করে হাত ও পায়ে।

পায়ে অসাড়তা বা ঝি ঝি ধরা

হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ বা অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভারের কারণে পায়ে অসাড়তা ও ঝি ঝি ধরার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা প্যারেস্থেসিয়া নামেও পরিচিত।

যদিও এই অবস্থা লিভারের সমস্যার সঙ্গে সাধারণ নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে লিভারের রোগ পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির কারণে এমনটি হতে পারে। এক্ষেত্রে হাত ও পায়ের স্নায়ু প্রভাবিত হয় ও অসাড়তা দেখা দেয়।

লিভার সমস্যার অন্যান্য লক্ষণ

মায়ো ক্লিনিকের মতে, লিভার রোগের কিছু সাধারণ লক্ষণের মধ্যে আছে-

১. ত্বক ও চোখে হলুদ ভাব (জন্ডিস)
২. পেটে ব্যথা এবং ফোলাভাব
৩. চুলকানি
৪. গাঢ় প্রস্রাবের রং
৫. ফ্যাকাশে রঙের মল
৬. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি
৭. বমি বমি ভাব বা বমিভাব ইত্যাদি।

লিভার রোগের ঝুঁকি কমাবেন কীভাবে?

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো, পরিমিতভাবে অ্যালকোহল পান করা, ধূমপান ত্যাগ করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, বুদ্ধিমানের সঙ্গে ওষুধ ব্যবহার করা ও যৌনতার সময় কনডম ব্যবহার করা।

এছাড়া সঠিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। ইনজেকশন দেওয়ার জন্য একই সুচ পুনরায় ব্যবহার না করার দিকে লক্ষণ রাখতে হবে।

আপনি যদি হেপাটাইটিস সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন বা এরই মধ্যে কোনো ধরনের হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে দ্রুত টিকা নিন।