খাঁটি খেজুর গুড় চেনার কিছু সহজ উপায়! শিখেনিন আপনিও

বাঙালি গুড় খেতে ভীষণ ভালোবাসে। গুড়ের মিষ্টি গন্ধ আর স্বাদ গুড়প্রেমীদের মন কেড়ে নেয়। শীতের এ সময় পিঠা-পায়েসে গুড়ের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিনির থেকে কিন্তু গুড় স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ ভালো। অনেকেই আবার শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত গুড় খান। গুড়ে থাকে লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম এবং পটাশিয়াম। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও সংক্রমণ দূরে রাখে।

খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয় মিষ্টি গুড়। অনেক দেশে পামের রস থেকেও গুড় তৈরি করা হয়। রস সংগ্রহ করার পরে তা বড় পাত্রে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিয়ে জ্বাল দেয়া হয়। এই রস আগুনের তাপে ফুটে ওঠে এবং গুড়ে পরিণত হয়।

দেশে আজকাল গুড়ে মেশানো হচ্ছে ভেজাল। গুড় তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম চিনি ও রাসায়নিক রং দিয়ে। এসব গুড়ে স্বাদ ও গন্ধ কিছুই থাকে না। অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক চিন্তা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি লোভ খেজুরের ভেজাল গুড় তৈরির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে এবং রং উজ্জ্বল করতে খেজুর গুড়ে চিনি, ফিটকিরি ও রাসায়নিক মেশানোর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু গুড় আসল না ভেজাল, তা চেনার উপায় আছে।

গুড় কেনার সময় অবশ্যই রং দেখে নিন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখে বিচার করা যায় সেটি ভালো কিনা। যদি শুদ্ধ ভালো গুড় হয় তাহলে তার রং হবে, গাঢ় বাদামি। হলুদ রং থাকলে বুঝতে পারবেন যে রাসায়নিক কিছু মেশানো রয়েছে।

ভেজাল গুড়-পাটালি চকচক করে। গুড়ের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে পাটালি তৈরি করলে সেটা খুব শক্ত হয়। রসাল থাকে না। পাটালির রং কিছুটা সাদা হয়ে যায়। গুড়ে হাইড্রোজ, ফিটকিরি ব্যবহার করলেও পাটালির রং সাদা হয়। পাটালি ভীষণ শক্ত হয়।

আসল খেজুর গুড়ের পাটালি চকচক করে না। খাঁটি পাটালির রং হয় কালচে লাল। সেটা নরম ও রসাল থাকে। অনেক সময় পাটালির ওপরের অংশ কিছুটা শক্ত হতে পারে, কিন্তু ভেতরটা রসাল হয়।

মুখে দিয়ে দেখুন স্বাদ নোনতা কিংবা তিতা কিনা। পুরনো ও ভেজাল গুড় নোনতা হয়। আর অতিরিক্ত জ্বাল দেওয়ার ফলে তিতা ভাব চলে আসে গুড়ে।

কেনার সময় একটু টিপে দেখবেন। যত শক্ত হবে ততই ভালো। শক্ত গুড় থাকলে অন্যান্য সামগ্রী মেশানো সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে। কেনার সময় দেখবেন, অনেকেই একটু চেখে নিতে বলে। যদি স্বাদ নোনতা থাকে তাহলে বুঝবেন কিছু মেশানো রয়েছে। এই ধরনের গুড় যত পুরনো হবে ততো লবণের মাত্রা বেশি থাকবে।

যদি স্বাদ একটু তেতো হয় তাহলে বুঝবেন যে বেশি ফাটানো হয়ে গেছে গুড়। এবং তাতে মেশানো রয়েছে অন্যান্য শর্করা। কেনার সময় ভালো করে দেখবেন যে, তার কিছু অংশ স্ফটিকের মতো কিনা। যদি গুড় এর মধ্যে ফটিকের মত কোন অংশে থাকে তাহলে বুঝতে পারবেন মিষ্টতা বাড়ানোর জন্য তাতে কিছু মেশানো হয়েছে।