গর্ভবতী মায়ের শরীরে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। অনেক মায়ের পা ফোলা সমস্যায় ভুগে থাকেন।পা ফুলে গেলে হাটা চলায় খুব সমস্যা দেখা দেয়।পা ফোলা যদি পরিমাণে কম হয় তবে খুব একটা সমস্যা নয় আর যদি পা ফোলা অতিরিক্ত হয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে।কারণ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পা ফোলা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। পা ফোলে গেলে বিছানা থেকে সামান্য উচুতে রেখে রাতে ঘুমাতে হবে।এছাড়া দিনে ৬-৮ গ্লাস জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিসৎকরা।
গর্ভাবস্থায় পা কেন ফোলে?
গর্ভাবস্থায় অনেকেরই পায়ে জল আসে এবং পা অতিরিক্ত ফোলে যায়। আনেক গর্ভবতী মায়ের পা সামান্য ফোলে, আবার অনেক মায়ের ফোলার পরিমাণ বেশি। গর্ভের শিশু যখন বড় হয়, তখন তার মাথার চাপে মায়ের নিম্নাঙ্গের যে শিরাগুলো দিয়ে রক্ত হৃৎপিণ্ডে প্রবাহিত হওয়ার বিঘ্ন ঘটে। আর রক্তনালি থেকে জল বাইরে বেরিয়ে আসে।এ কারণে মূলত পা ফোলে।
আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পা ফোললে কী করবেন?
প্রচুর জল পান করুন
গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণ জল পান করলে তা শরীর থেকে সব টক্সিন পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি বাথরুম যাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত জলও বের হয়ে যায়। এতে শুধু পা-ই নয় শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন: মুখের ফোলাভাবও কমে যায়।
অনেক সময় পা ঝুলিয়ে বসে থাকা পরিহার করুন
গর্ভাবস্থায় অনেক সময় ধরে পা ঝুলিয়ে বসে থাকা যাবে না। এতে পা ফোলার পরিমান আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই দীর্ঘক্ষণ পা ঝুলে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন।
অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা
গর্ভবস্থায় একইভাবে অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এতে শরীরের নিচের দিকে জলীয় অংশ বেশি প্রবাহিত হতে থাকে, যার ফলে পা ফোলে ওঠে।
লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়া
গর্ভাবস্থায় পা ফোলা থেকে রেহাই পেতে লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। কারণ লবণ শরীরে জল ধরে রাখে। তাই বলে একেবারেই লবণ খাবেন না তা কিন্তু নয়, কারণ শরীর সঠিকরূপে চালনা করতে লবণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের প্রয়োজন রয়েছে।
সুষম খাদ্য গ্রহণ
গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্যও পা ফোলা কমাতে সাহায্য করে। এটি এমন একটি বিষয়, যা শুধু গর্ভাবস্থায় নয় সবাইকে মেনে চলা উচিৎ।
ঢিলেঢালা পোশাক পরা
জিন্স বা ট্রাউজারের মত টাইট পোশাক পায়ের ওপর চাপ বৃদ্ধি করে, এটি ঘুরেফিরে ফের সেই পা ফোলায়। তাই টাইট পোশাক পরা এড়িয়ে চলুন।
একইভাবে অনেক সময় ধরে শুয়ে থাকা যাবে না
গর্ভাবস্থায় একই জায়গায় একইভাবে অনেক সময় ধরে শুয়ে থাকবেন না। তাহলে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে জল জমে সেই অংশটা ফুলিয়ে দিতে পারে। একইভাবে শুয়ে বা বসে না থেকে মাঝে মাঝে স্থান পরিবর্তন করুন।
নিয়মিত চেকআপ
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপ করা জরুরি। পা ফোলে গেলে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তশূন্যতা, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
ডাক্তারের পরামর্শ নিন
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পা ফোলে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ অতিরিক্ত পা ফোলা মা ও শিশুর জন্য ঝুকির কারণ হতে পারে। তাই এ বিষয়ে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।