মলের রং ও ধরনে পরিবর্তন আসলে সতর্ক হতে হবে সবারই। কারণ এটি হতে পারে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের লক্ষণ। অগ্ন্যাশয় ক্যানসার ইউকে অনুসারে, অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের বেঁচে থাকার হার সব সাধারণ ক্যানসারের মধ্যে সবচেয়ে কম।
তাই মলের রং ও ধরনের পরিবর্তন দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে। প্রাথমিকভাবে ক্যানসার শনাক্ত করতে পারলে অকালে মৃত্যুঝুঁকি এড়ানো যাবে।
অগ্ন্যাশয় ক্যানসার কি?
অগ্ন্যাশয় ক্যানসার অগ্ন্যাশয়ের টিস্যুতে শুরু হয়। যা পেটের নীচের অংশের পেছনে থাকে। অগ্ন্যাশয় এনজাইম নিঃসরণ করে যা হজমে সাহায্য করে। এমনকি হরমোনও তৈরি করে, যা রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার সাধারণত সেই কোষে শুরু হয়, যা আপনার অগ্ন্যাশয় থেকে পরিপাককারী এনজাইম বহনকারী নালিগুলোর সঙ্গে থাকে।
মলে পরিবর্তন ঘটে কেন?
মলের পরিবর্তন অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। প্রাথমিক পর্যায়ে, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সাধারণ পিত্তনালিতে চাপ দিতে পারে। এটি অন্ত্রে পিত্তের স্বাভাবিক নিঃসরণকে বাধা দেয়, যার ফলে বাধামূলক জন্ডিস হতে পারে।
এ কারণে রোগী ত্বক ও চোখ হলুদ, গাঢ় প্রস্রাব ও ফ্যাকাশে রঙের মল লক্ষ্য করেন। আবার ত্বকে খুব চুলকানিও হতে পারে।
মলের রং ও ধরনে কোন পরিবর্তন ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয়?
অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো অ্যাকোলিক মল। ইউএস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে, পিত্ত রঞ্জকের অভাবের কারণে এক্ষেত্রে মলের রং কাদামাটির মতো হয়।
অগ্ন্যাশয়ের এনজাইমের অপ্রতুলতার কারণে ফ্যাকাশে, চর্বিযুক্ত ও প্রায়শই দুর্গন্ধযুক্ত মল হয়। এক্ষেত্রে রোগী বারবার টয়লেটের চাপ অনুভব করেন, অর্থাৎ পেট পরিষ্কার হয় না সহজে।
হালকা সবুজ, ফ্যাকাশে বাদাদি, কমলা, হলুদ, এমনকি সাদা রঙের মলও কিন্তু অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয়। এর পাশাপাশি মলের ধরনেও পরিবর্তন আসে যেমন- ঘন, আলগা, ঢিলেঢালা, আয়তনে বড় ইত্যাদি।
অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের অন্যান্য লক্ষণ কী কী?
মলের পরিবর্তন ছাড়াও আরও বেশ কিছু উপসর্গ আছে, যা অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে আছে-
১. পেটে ব্যথা
২. জন্ডিস
৩. ডায়াবেটিস
৪. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন
৫. বদহজম
৬. বমি বমি ভাব ও বমি
৭. ওজন কমে যাওয়া
৮. দুর্বলতা
৯. নন-কার্ডিয়াক বুকে ব্যথা
১০. কাঁধে ব্যথা
১১. ক্ষুধামন্দা
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
মলের রং ও ধরনে পরিবর্তনসহ আপনি যদি ফ্যাকাশে ও চর্বিযুক্ত মল দেখেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তার সংক্রমণ ও লিভারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য রক্ত পরীক্ষার সুপারিশ করতে পারেন।
সিইএ ও সিএ ১৯-৯ (রেকটাল ক্যানসার ও কোলনের অন্যান্য অংশের রোগীদের স্টেজিংয়ে ব্যবহৃত সবচেয়ে সাধারণ টিউমার সম্পর্কিত অ্যান্টিজেন) এর মতো অগ্ন্যাশয় চিহ্নিতকারীর জন্যও পরীক্ষা করাতে পারে।
লিভার ও পিত্তনালি পরীক্ষা করার জন্য অন্যান্য পরীক্ষা যেমন লিভারের আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যানের প্রয়োজন হতে পারে।