রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে চান? তাহলে বদলাতে হবে যে সকল অভ্যাস, জেনেনিন

অপুষ্টি, কৃমি, রক্তপাত ইত্যাদির পাশাপাশি ভুল জীবন যাপনের কারণে শরীরে কমতে থাকে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ। আবার সঠিক সময়ে না খাওয়ার ফলে শরীরে বাড়ে না এই উপদানটি। রক্তের মূল উপাদান আয়রন কমে গেলে তার সরাসরি প্রভাব পরে চেহারায়।
এরকম অবস্থায় শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য অনেকেই সবুজ শাকসবজি, তরিতরকারি এবং আয়রনসমৃদ্ধ ফলমূল খেয়ে থাকেন। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলেন এগুলোতে তো বাড়বেই এবং এর সঙ্গে যদি কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করা যায় তাতে শরীরে অধিকহারে বাড়বে হিমোগ্লোবিন।

শরীরে হিমোগ্লোবিন কম থাকাকে আমরা বলে থাকি রক্তস্বল্পতা। আর এ থেকেই শরীরে অ্যানিমিয়া সহ নানা অসুখের উৎপত্তি হতে পারে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডাল-ভাত এড়িয়ে আজকাল মুখরোচক খাবারে অভ্যস্ত হচ্ছে মানুষ। আবার পুষ্টিগুণ ও ক্যালোরির চিন্তা না করে ওজন কমাতে খাচ্ছেন মিল সাপলিমেন্ট আর জাঙ্ক ফুড৷ আর এসবেই শরীরে বাসা বাঁধছে এই রোগ৷

পুষ্টিবিদদের মতে, এই রোগ ঠেকাতে প্রতিদিনের অভ্যাসগুলোর একটা-দুটা করে বদলাতে শুরু করলেই কাজ হবে অধিকহারে৷

এবার জেনে নেওয়া যাক শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কোন কোন অভ্যাস বদলানো জরুরি-

* খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে বা পরে চা, কফি, কোলা জাতীয় খাবার খেলে আয়রন শরীরে ঠিকভাবে শোষিত হতে পারে না৷ কাজেই এই অভ্যাস বদলে ফেলুন৷

* ফল খালি পেটে না খেয়ে, খাবার পরে খাবেন৷ ফলের ভিটামিন সি খাবারের আয়রন শোষিত হতে সাহায্য করে৷ একই কারণে খাবারের সঙ্গে লেবু খেলেও উপকার পাবেন।

* ইসবগুল খাওয়ার অভ্যাস অনেকের। এ ক্ষেত্রে এটি খেতে হবে খাবার খাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে বা পরে৷ না হলে ফাইবারের ছাঁকনিতে পুষ্টির বেশ কিছুটা আটকে যেতে পারে৷

* জাঙ্ক ফুড হল মুখরোচক খাবার৷ এতে তেমন একটা পুষ্টিগুণ নেই৷ বেশি খেয়ে পেটের গোলমাল হলে আরেক সমস্যা৷ কাজেই সপ্তাহে এক-দু’বারের বেশি খাবেন না৷

* দিনে অন্তত দু’বার ঘরে বানানো টাটকা সুষম খাবার খাবেন৷ চেষ্টা করুন বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যেতে৷ আর দিনের একবেলার খাবার ফল, দই, রায়তা দিয়ে সারার চেষ্টা করুন৷

* ঘুমাতে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে রাতের খাবার খাবেন।

* আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার একসঙ্গে খেলে কে আগে শোষিত হবে তা নিয়ে শুরু হয় লড়াই৷ সে জন্য মাছ, মাংস, ডিম খাওয়ার পর দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া ঠিক নয়৷

* রেড মিট, মাছ বিশেষ করে কুঁচো চিংড়ি, ডিম ইত্যাদিতে আছে হিম-আয়রন, যা সহজে শরীরের কাজে লাগে৷ আর দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, মসুর ও অন্যান্য ডাল, বিন, পাস্তা, বাদাম, ফর্টিফায়েড ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালে থাকে নন–হিম আয়রন, যা সহজে শোষিত হতে পারে না৷ তবে এর সঙ্গে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন, লেবু, কমলা, আমলকি বা অন্য টক ফল খেলে শোষণের হার বাড়বে।