দূর-দূরান্তে খবরাখবর পাঠাতে কবুতরের পর ইলেকট্রিকের যুগ এলো। ফ্যাক্সের মাধ্যমে জরুরি সংবাদ প্রেরণ করা গেলেও তা ছিল সময়সাপেক্ষ। এর অভাব ঘুচালো মোবাইলফোন। কথা বলার পাশাপাশি টেক্সট বা মেসেজ পাঠানো যায় মুহূর্তেই। জানেন কি? বিশ্বের প্রথম সেন্ড করা মেসেজ কি ছিল?
১৫ বছর আগে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং বলতে ছিল একটাই অপশন-টেক্সট মেসেজ। ১৬০ ক্যারেক্টার বা তার বেশি কমে পাঠানো যেত ক্ষুদেবার্তা। এসবে আবার টাকাও চার্জ করত টেলিকম সংস্থাগুলো। তবে প্রথম মেসেজটি পাঠানো হয়েছিল ৩০ বছর আগে ১৯৯২ সালে। ক্ষুদেবার্তাটি পেয়েছিলেন ব্রিটেনের ভোডাফোনের এক কর্মী।
যিনি সেই মেসেজটি পাঠিয়েছিলেন, তিনি একটা শুভেচ্ছাবার্তা লিখেছিলেন, ‘মেরি ক্রিস্টমাস!’ আর সেই মেসেজই এখন NFT হিসেবে নিলামে উঠতে চলেছে। নিলামে তুলছে সেই নেটওয়ার্ক জায়ান্ট ভোডাফোনই। এর দাম শুনলে চক্ষু কপালে ওঠার মতোই অবস্থা হতে পারে আপনার!
চলতি বছরের ২১ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম SMS-এর নিলাম হতে চলেছে প্যারিসে। NFT (ডিজিটাল সম্পদ) হিসেবেই নিলামে উঠেছে সেই মেসেজটি। আর সেই মূল্যবান সম্পদের নিলাম অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হতে চলেছে ফ্রান্সের প্রথম ইন্ডিপেনডেন্ট অকশন হাউস, আগুত্তেসে। জানা গিয়েছে, দরদাতারা তাদের বিড অনলাইনেও রাখতে পারেন।
আর এই মেসেজ যে বা যারা কিনবেন, তাদের একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। গ্যারান্টি হিসেবে সেই সার্টিফিকেটে থাকবে ভোডাফোন গ্রুপ সিই নিক রেডের স্বাক্ষর। যদিও ভোডাফোন তাদের কাছে সেই SMS এরই একটি রেপ্লিকা রেখে দেবে, পাশাপাশি সেই কমিউনিকেশনের বিভিন্ন ডকুমেন্টও সংস্থার কাছে থাকবে। NFT ছাড়াও যে বা যারা সেই SMS কিনবেন, তার বা তাদের কাছে সেই কমিউনিকেশনের একটি TXT পাইল এবং আর একটি PDF ফাইলও দেওয়া হবে।
প্রাথমিক ভাবে বিশ্বের প্রথম SMS-এর NFT-র দাম রাখা হয়েছে ২ লাখ মার্কিন ডলার, যা প্রায় ১.৭৪ কোটি টাকারও বেশি। আর এই নিলাম থেকে ওঠা সমস্ত টাকাই ডোনেট করা হবে UNHCR (ইউনাইটেড নেশনসের একটি রিফিউজি এজেন্সি)-এর কাছে। দেশ থেকে বিভিন্ন কারণে যারা বিতাড়িত হয়েছেন, এমনই ৮২.৪ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে সেই অর্থ।
সেই মেসেজটি পাঠিয়েছিলেন নিউবারির ইঞ্জিনিয়ার নেইল পাপওয়ার্থ। আর যাকে পাঠিয়েছিলেন তার নাম রিচার্ড জার্ভিস। তিনি ভোডাফোনের একজন কর্মী ছিলেন। ভোডাফোনের শর্ট মেসেজ সার্ভিসের (SMS) এক জন টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছিলেন পাপওয়ার্থ। আর সেই টেস্টিংয়ের অংশ হিসেবেই আর এক সহকর্মীকে তিনি ‘মেরি ক্রিস্টমাস’ লিখে পাঠিয়েছিলেন।
একটি অরবিটেল ৯০১ হ্যান্ডসেট থেকে ১৯৯২ সালের ৩ ডিসেম্বর মেসেজটি সফল ভাবে পাঠানো হয়েছিল। আর সেই মেসেজ পাঠানোর পরই তৎকালীন বিভিন্ন ফোন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোও মেসেজ পাঠানো এবং রিসিভ করার ফিচারটি ফোনগুলোতে যোগ করতে থাকে। অতঃপর টেক্সট মেসেজের ফিচার সহযোগে কোনো ফোন সর্বপ্রথম বাজারে নিয়ে আসে নোকিয়া।