ক্যান্সার বা কর্কটরোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পড়ে না, ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোনো চিকিৎসা দেওয়াও সম্ভব হয় না। বাস্তবিক অর্থে এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি।
ক্যান্সার সারানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে এই রোগ সারানোর সম্ভাবনা অনেকাংশ বেড়ে যায়। ২০০ প্রকারেরও বেশি ক্যান্সার রয়েছে। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং এদের চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। বর্তমানে ক্যান্সার নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে এবং এ সম্পর্কে নতুন নতুন অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীকে যখন কেমোথেরাপি দেওয়া হয়, তখন শরীরে বেশি করে মেডিসিন দেওয়া হয়। ফলে বিভিন্ন প্রকারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় যেমন- চুল পড়ে যাওয়া, চোখের নিচে কালো দাগ ও খাবারে অরুচি। এ সময় ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি খাবারের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা ফ্রেশ সব খাবার খেতে পারবেন। তবে চার ধরনের খাবার ক্যান্সার রোগীরা খাবেন না। এসব খাবার তাদের জন্য ক্ষতিকর। এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ডা. আখতারুন নাহার আলো গণমাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন। সেটি তুলে ধরা হলো:-
যেসব খাবার ক্যান্সার রোগীরা খাবেন না:-
ফ্রিজে রাখা খাবার ক্যান্সার রোগীরা খাবেন না।
খাদ্য সংরক্ষণে ফরমালিন নিষিদ্ধ হয়েছে অনেক আগে। তবে নানা রকম প্রিজারভেটিভের ব্যবহার চলছেই। প্রিজারভেটিভ দেয়া খাবার খাবেন না।
সিঙাড়া, সমুচা ও অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার ক্ষতিকর।
বারবিকিউ জাতীয় খাবার, অর্থাৎ যেসব খাবার সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয় যেসব খাবার খাবেন না।
ক্যান্সার রোগীরা যা খাবেন:-
ক্যান্সার রোগীরা নরম ভাত খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ কেমোথেরাপির সময় তা হজমে সমস্যা হয়। নরম ভাতের সঙ্গে ঠাণ্ডা তরকারি দিতে হবে। ঠাণ্ডা তরকারি বলতে তেল-মসলা কম দিয়ে খাবারটা দিতে হবে।
এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন। এ সময় শরীরে ভিটামিনস, মিনারেলস, আয়রন, হিমোগ্লোবিন- এগুলোর অভাব দেখা যায়। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে বিট রুটের শরবত দেয়া যেতে পারে।
এ সময় খেতে পারেন প্রচুর হিমোগ্লোবিন ভরপর আনার। কচুশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক; অবশ্যই ওটার সঙ্গে লেবুর রসটা মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। কারণ ভিটামিন সি সাধারণত আয়রন অ্যাবজর্বসনে সহায়তা করে।
প্রতিদিন একটি করে রসুন খেতে পারেন। রসুন একপ্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের বিভিন্ন টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া কেমোথেরাপির সময় রোগীকে বেশি করে জল পান করাতে হবে।
ক্যান্সার রোগীকে স্যুপ দেয়া যেতে পারে। টমেটো স্যুপে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তা ক্যান্সার প্রিভেন্ট করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সব ধরনের ফ্রেশ খাবার খান।