শুষ্ক ত্বক প্রানবন্ত রাখার ৯টি ঘরোয়া টিপস, জেনেনিন অবশ্যই

শীত আসা মানেই যেন গায়ের রঙ কালো হয়ে যাওয়া। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন, শীতের দিনে চেহারাটা ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখা খুব কঠিন। জেনে নিন, কিছু জরুরী টিপস। একটু নিয়ম করে মেনে চললেই এই শীতেও আপনার ত্বক থাকবে ফর্সা ও উজ্জ্বল।

১) শীতের দিনে চেহারা মলিন ও কালো দেখানোর প্রথম কারণ বাজার চলতি কিছু খারাপ খারাপ বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা। বিশেষ করে যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদেরকে যেন কালো আরও বেশি দেখায়। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ক্রিম আটকে ফেলে, ফলে নষ্ট হয়ে যায় চেহারার সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্যকে ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই তৈলাক্ত ত্বকের ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে, এই ক্লিনজার বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন। এক চামচ পাতিলেবুর রস এবং কাঁচা দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি তুলোর মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে যদি মুখের মধ্যে ভালো করে লাগিয়ে নিতে পারেন। তাহলে দেখবেন তৈলাক্ত ত্বক অনেক পরিস্কার হয়ে যাবে।

২) শীতের মরসুমে ত্বকে মরা কোষটাও বেশি জমার কারনে তাই নিয়ম করে সপ্তাহে ২/৩ বার স্ক্রাবিং করুন। এক্ষেত্রে এক চামচ কফি ও এক টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো এর সাথে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাবার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। কফি ত্বক উজ্জ্বল করে।

৩) ত্বকের রঙ উজ্জ্বল, ফর্সা করার জন্য একদিন পর পর ব্যবহার করুন টমেটো। একটি টমেটোর পাল্প পুরোটা বের করে নিন, এর সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও সামান্য বেসন মিশিয়ে ব্যবহার করুন মুখে গলায় হাতে পায় এবং পিঠে।

৪) রোদে বের হওয়ার আগে অবশ্যই ছাতা, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। তবে সানস্ক্রিন বাড়িতে বানাতে পারেন এক্ষেত্রে প্রয়োজন তিলের তেল তিলের তেল অসাধারণ একটি প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন তিলের তেলের সঙ্গে পরিমাণমতো চন্দনের গুঁড়া, পরিমাণমতো গোলাপের পাপড়ির খোসা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই তেলটি একটি কাঁচের পাত্রের মধ্যে অন্তত ৫ দিন ভালো করে চড়া রোদে রাখতে হবে। তারপর এই তেলটি ওপর থেকে ছেঁকে নিয়ে তেলটি ভালো করে বেরোনোর আগে মালিশ করে নিতে হবে। যারা বেরোনোর আগে তেল মাখতে চান না, তারা রাতে ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে তেল দিয়ে মালিশ করতে পারেন।

৫) এই শীতে ত্বক নরম ও ফর্সা করতে আরেকটি চমৎকার উপাদান হতে পারে পাকা পেঁপে। পাকা পেঁপে চটকে নিয়ে উপযুক্ত পরিমাণে গোলাপ জল দিয়ে মিক্সিতে ভালো করে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এরপর ছেঁকে নিতে হবে এরপরে এই পেঁপের সঙ্গে দু’চামচ অ্যালোভেরা জেল, এক চামচ খাঁটি মধু, এক চামচ কফি পাউডার ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে একটি শিশির মধ্যে রেখে দিতে হবে, হাতের আঙ্গুলের ডগায় নিয়ে মুখে ভালো করে মালিশ করে নিতে হবে।

৬) শীতকালে ফেসওয়াশ করার পরে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্রিম বেসড ময়েশ্চারাইজার লাগালে ভালো হয়। যাদের শুষ্ক ত্বক তারা ময়েশ্চারাইজার এর সঙ্গে ভিটামিন ই অয়েল ব্যবহার করবেন। এতে ত্বক অনেক সুন্দর এবং নরম থাকবে এবং ত্বকের ওপরে হওয়া কালো দাগ সহজে দূর হয়ে যাবে।

৭) শীতকাল মানেই প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি বাজারে পাওয়া যায়। চেষ্টা করবেন, আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যেন রংবেরঙের সবজি থাকে। যেমন গাজর, পালং শাক, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি এছাড়া বেগুনি বাঁধাকপি যদি পাওয়া যায়, ক্যাপসিকাম নানা রঙের , যখন যার সাধ্যমতো প্রতিদিন পারেন। খাবারের মধ্যে যত বেশি রং থাকবে তত আপনার শরীরের জন্য তা ভালো। সেক্ষেত্রে স্যালাড খেতে পারেন, স্যালাড খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ভালো।

৮) শীতকালের সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম জলে মুখ ধুতে পারেন, আবার পরক্ষনেই কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে মুখে মাসাজ করতে পারেন। এতে মুখের ভেতরের অক্সিজেন সার্কুলেশন বেড়ে যাবে। তাতে তো অনেক সুন্দর এবং চকচকে হবে।

৯) স্নানের আগে মুখ সহ পুরো শরীরে ভালো করে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। যদি অলিভ অয়েল না থাকে তাহলে অবশ্যই নারকেল তেলের মধ্যে কর্পূর মিশিয়ে এই মিশ্রণটি ভালো করে ত্বকে ম্যাসাজ করুন, সম্ভব হলে একটু খোলামেলা সুতির পোশাক পরে রৌদ্রে বেশ খানিকক্ষণ থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে তিলের তেল মালিশ করতে পারেন। তাতে ত্বকের ওপরে সান ট্যান পড়বে না।