বৃদ্ধ হলে তবেই চুল পাকবে এমন ধারণা ভুল। চুল পাকার জন্য বয়সের দরকার পড়ে না। চুলের অকালপক্বতার মূল কারণ জিনগত। পরিবারের কারও অল্প বয়সেই চুল পাকতে শুরু করলে পরবর্তী প্রজন্মেও সেই ধারা থাকতে পারে। আবার আধুনিক জীবনযাপনে অপুষ্টিকর খাবার, মানসিক অস্থিরতা, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদিও হতে পারে অকালে চুল পেকে যাওয়ার কারণ।
চুল একবার পাকতে শুরু করলে তা আর স্বাভাবিকভাবে কালো হবে না। তাছাড়া একবার চুল পাকতে শুরু করলে খুব দ্রুত মাথার বাকি অংশও সাদা হতে থাকে। তাই মাথায় সাদা চুল দেখা গেলেই সতর্ক হোন। বেছে নিন ঘরোয়া উপায় যাতে চুল ভালো এবং কালো দুটিই হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক-
মেহেদি: প্রাকৃতিক ভাবে চুল রাঙাতে এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হেনার জুড়ি নেই। যেদিন মেহেদি করবেন, তার আগের দিন মেহেদির গুঁড়া ভিজিয়ে রাখুন। শুধুমাত্র বড় ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত হেনাই ব্যবহার করবেন। চুলে লালচেভাব আনতে হলে হেনা ভেজাবেন লোহার পাত্রে। আর শুধু কন্ডিশনিং করতে হলে যেকোনো পাত্রেই ভেজাতে পারেন। পরেরদিন চায়ের লিকার বানান। কিছুক্ষণ চা পাতা ভিজতে দিন জলে। তবে বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন না। ঠান্ডা লিকারে মেশান ভেজানো মেহেদি। মাথায় খুশকির সমস্যা থাকলে এতে মেশান লেবুর রস।
এবার মেহেদির পেস্ট তৈরির পালা। সব একসাথে মিশিয়ে ব্রাশ দিয়ে মাথায় ভালো করে লাগিয়ে ফেলুন। স্ক্যাল্পে যেন মেহেদি না লাগে, খেয়াল রাখবেন। অন্তত এক ঘণ্টা প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন। তারপর হালকা গরম জলে শ্যাম্পু করে নিন। প্রতিমাসে একবার করে মেহেদি ব্যবহার করুন। কয়েক মাসে পরে নিজেই দেখবেন চুলের পরিবর্তন।
কারিপাতা: চুলের জন্য খুবই উপকারী। ‘ভিটামিন এ’, ‘ভিটামিন ই’, ক্যালসিয়াম, কপার, তামায় সমৃদ্ধ কারিপাতা অকালপক্বতা রোধ করে। চুল মোলায়েমও বানায়। নারিকেল তেলে কারিপাতা মিশিয়ে ফোটান। হালকা কালচে আভা দেখা দিলে বুঝবেন আর গরম করার দরকার নেই। এবার ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ভালো করে চুলের আগাগোড়া লাগিয়ে নিন। এরপর হাল্কা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
কালো কফি: গরম জলে কফি দিয়ে ক্বাথ বানান। মিশ্রণ ঠান্ডা হলে ওই ক্বাথ চুলে ভালো করে মাখিয়ে নিন। অন্তত বিশ মিনিট এভাবে চুল রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে নিয়মিতভাবে দুই থেকে তিনদিন এটা করতে থাকুন। চুলে বাদামি আভাস চলে আসবে।
আমলকি: আমলকি চুলের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। নারিকেল তেলের সঙ্গে আমলাগুঁড়ো মিশিয়ে গরম করতে হবে। তারপর সেটা ছেঁকে চুলের গোড়া থেকে ডগা অবধি লাগিয়ে নিন। রাতভর মাথায় রাখুন। তারপর সকালে হালকা গরম জলে চুল ধুয়ে নিন।
পেঁয়াজ: অকালে চুল পাকা রোধে পেঁয়াজও খুব কার্যকরী। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন আধঘণ্টা। তারপর হালকা গরম জলে চুল ধুয়ে ফেলুন।