সাইনোসাইটিসের কারণে এমনটা হতে পারে। আমাদেরর মাথার খুলির মধ্যে অনেকগুলো গহ্বর বা ফুটো থাকে। যেমন নাকে, কপালে, নাকের ঠিক দু’পাশে। এই গহ্বরগুলোকেই সাইনাস বলে। এই গহ্বরগুলোর ভেতরটা অনেকটা নাকের মতোই। ফলে নাকে যেমন মিউকাস থাকে, এই গহ্বরগুলোতেও মিউকাস থাকে। এই প্রত্যেকটি সাইনাসই অস্টিয়ামের সাহায্যে নাসিকাগহ্বরের সঙ্গে যুক্ত। সেগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই প্রত্যেক দিন নাসিকা গহ্বর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এবার এই সাইনাসের মিউকাস যদি বেরোতে না পারে, তখনই সমস্যা শুরু হয়। যাকে বলা হয় সাইনোসাইটিস।
মূলত নাকে সর্দি, হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া, মাথার যন্ত্রণা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া- এগুলোই সাইনাসাইটিসের লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। রোগ বাড়লে জ্বরও আসতে পারে। সাইনোসাইটিস বাড়লে মাথাধরার প্রবণতাও বাড়ে। সর্দি না কমালে কিন্তু মাথায় বাম লাগিয়ে এর থেকে মুক্তি পাবেন না। তবে মনে রাখতে হবে, সাইনাসাইটিস সম্পূর্ণ না সারলেও জীবনযাপনে বদল আনলে এই রোগের দাপট অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। রাতে ঘুমোতে গেলে অনেকেরই নাক বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ চালাতে হয়। এতে মুখের ভিতরটা শুকিয়ে যায়। এর থেকে মুখেও ইনফেকশন হতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।
করণীয়:
প্রথমত গরম জলর ভাপ নিতে হবে। জলে লবণ বা কিছু মেশানোর দরকার নেই। ঘুম থেকে উঠে জল গরম করে স্টিম নিন। নাক দিয়ে জল টানতে পারেন। সেজন্য জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তাতে অল্প লবণ মিশিয়ে নিন। এই স্টেরাইল স্যালাইন সলিউশন নাক দিয়ে টেনে ছেড়ে দিন। দু’নাকেই এই পদ্ধতিতে জল টানতে হবে এবং ছাড়তে হবে। এতে উপকার পাবেন।
অনেকেই বাজার থেকে কেনা নেজাল ড্রপ ব্যবহার করে থাকেন, যা সাধারণত জাইলোমেটাজোলিন ড্রপ। কিন্তু এই ধরনের নেজাল ড্রপ একটানা সাতদিনের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।
যে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন:
ঠান্ডায় মিউকাস জমে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই শীত পড়ার আগে থেকেই সাবধান হতে হবে। রাতে বা ভোরবেলা অটো, ট্রেন অথবা বাসে যাতায়াত করলে কান-মাথা-নাক চাদর বা স্কার্ফ দিয়ে ভালো করে মুড়িয়ে নিন।
কর্মক্ষেত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলে, মাঝেমাঝে উঠে স্বাভাবিক আবহাওয়ায় একটু ঘুরে আসুন। খুব ঠান্ডায় বসে কাজ করতে হলে স্কার্ফ দিয়ে মাথা-কান ঢেকে রাখুন।
ডাস্ট, পোলেন বা কোনোরকম অ্যালার্জি থাকলে, তা থেকেও কিন্তু সাইনোসাইটিসের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। সে বিষয়ে সচেতন হন।