হাই হিল ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে বেশ প্রিয়। আবার বিশ্বের নামীদামী মডেল-অভিনেত্রীদেরও হাই হিলেই অভ্যস্ত দেখা যায়। কিন্তু অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন অন্য বিপদের কথা। জুতার মতো নিত্য ব্যবহার্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসটির দিকে নজর না দিলে অনেকরকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোমরে, পিঠে আর পায়ে ব্যথা তো হবেই, এমনকী অস্থিঘটিত এবং স্নায়ুর জটিল রোগও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু দামী জুতা কিনলেই হবে না, এর হিলের উচ্চতা এবং গঠনের দিকেও নজর দিতে হবে। হিল বেশি উঁচু হলে শরীর নিজের ভারসাম্য রক্ষার জন্য দাঁড়ানোর ভঙ্গীতে কিছু পরিবর্তন করে। শিরদাঁড়ার স্বাভাবিক গড়ন বিঘ্নিত হয় তখনই। চাপ পড়ে নিতম্ব, পিঠ, পায়ের পেশি এবং হাঁটুর উপর। হাইহিল বেশি পরলে শরীরের ওজন বণ্টনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। পায়ের পাতার উপর চাপ বাড়ে।
অল্প সময়ের জন্য পরলে খুব একটা সমস্যা হয় না তবে নিয়মিত হাইহিল পরার অভ্যাস থাকলে মুশকিল। পরিসংখ্যান বলছে, ৭২% নারী তাদের জীবদ্দশার কোনো না কোনো সময়ে হাইহিল পরেন। তাদের একটা বড় অংশ বিশেষ অনুষ্ঠানের সময়েই কেবল হাইহিল পরলেও, অনেকেই নিয়মিত স্টিলেটোর মতো জুতো পরে থাকেন। ওজনের বণ্টন ঠিকমতো না হওয়ায় অধিকাংশ সময়েই পড়ে গিয়ে বিপদের ভয় থাকে তাদের ক্ষেত্রে।
যারা দীর্ঘক্ষণ হাই হিল পরে থাকেন, তারা ভুগছেন কাফ মাসেলে যন্ত্রণা, লো ব্যাক পেন এবং পায়ের পাতায় যন্ত্রণা নিয়ে। কাফ মাসেলের উপর বেশি জোর পড়তে থাকলে গোড়ালির পিছনের দিকে টেন্ডো অ্যাকাইলিসের মতো সমস্যাও দেখা দিচ্ছে অনেকের। এমনকী শিরদাঁড়ার আকার বদলে যাওয়ায় ফোরামিনাল স্টেনোসিসের মতো রোগও দেখা দেয়।
খুব টাইট অথবা ছুঁচালো মুখের জুতা পরলে, অনেক সময়ে পায়ের পাতার হাড়ের মধ্যে স্নায়ুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রবল যন্ত্রণারও শিকার হন অনেকে। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম, মর্টনস নিউরোমা। ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে অনেক সময় এই রোগে আক্রান্তদের অস্ত্রোপচারও করতে হয়।
তাহলে কেমন জুতা পরবেন? হিলের উচ্চতা ইঞ্চির তিন চতুর্থাংশ অথবা এক ইঞ্চির বেশি না হওয়াই বাঞ্চনীয়। হিলের উচ্চতা নির্দিষ্ট করা এবং পায়ের নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। যদি কোনো সমস্যা অনুভব করেন তবে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।