আপনার কি ঘুমের সমস্যা বাড়ছে? তাহলে খেতে পারেন এই ৩টি পানীয়

আধুনিক যুগের ইদুর দৌড় তো ছিলই, পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে এই কোভিডকালে। মারণ ভাইরাসের হানায় বেড়েছে অনিশ্চয়তা ও হতাশার পরিমান। অতিমারির সঙ্গে লড়তে লড়তে নিত্য জীবন অতিবাহিত করতে ছুটছে কালঘাম। ফলে অস্বাস্থ্যকর অনেক কিছুই অজান্তে আমাদের অভ্যেস হয়ে উঠেছে। এর প্রভাব পড়ছে ঘুমের ওপর, হয় ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে আর না হলে অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে। এর কারনে আবার অনেকের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা। একটানা এই ঘুমের বিঘ্ন ঘটায় প্রভাবিত হচ্ছে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যও। তাই ভাল ঘুমের জন্য ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই পানীয়গুলো খেতে পারেন। রইল তালিকা-

ক্যামোমাইল টি

সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে অনেকেই হার্বাল টি খান।  ক্যামোমাইল সেই সবের অন্যতম তবে শুধু ক্লান্তি দূর করতেই নয় এই চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ উপাদান। এই সব উপাদান ঘুমোতে সাহায্য করে। পাশাপাশি অ্যাংজাইটি ও বিষাদ থাকলে তা কম করে। এখানেই শেষ নয় হার্টের অসুখ ও ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমায় এই চা।

কীভাবে বানাবেন  দেখে নিন

প্রথমে জল গরম করে নিন। জল ফুটতে শুরু করলে তাতে ক্যামোমাইল চা দিন। কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর কাপে ঢেলে নিন। চায়ের সুগন্ধে মন ভাল হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে স্বাদ বদলাতে ক্যামোমাইল চায়ে দিতে পারেন মধু, আদা কিংবা অ্যাপেল মিন্ট লিভস।

দুধে হলুদ ও কেশর মিশিয়ে খেতে পারেন

সেই  কোন প্রাচীনকাল থেকেই ভাল ঘুমের জন্য রাতে দুধ খাওয়ার চল রয়েছে।  দুধে ট্রিপটোফ্যান ও অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যা আমাদের শরীরে ঢোকে এবং ঢোকার পর মেলাটোনিন নামক হরমোনে বদলে যায়। এই হরমোন আমাদের ঘুম নির্ধারণ করে তাই এটা সক্রিয় হলে ঘুম আসে তাড়াতাড়ি।  জেট ল্যাগ, স্ট্রেস ও ইনসোমনিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

এদিকে হলুদের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি কার্যকারিতা রয়েছে। অন্যদিকে কেশরে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এই তিনটি উপকরণের সব কটি উপাদান ঘুমোত সাহায্য করে। তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গরম দুধে মধু ও কেশর মিশিয়ে খেলে আরাম পাবেন। বিষাদ দূর হবে।

তবে যারা ল্যাক্টোস ইনটোলারেন্স তারা প্ল্যান্ট বেস্ড মিল্ক যেমন কাজু, আমন্ড বা ওটসের দুধে হলুদ ও কেশর মিশিয়ে খেতে পারেন।

অশ্বগন্ধা চা  

আয়ুর্বেদের চিকিত্সায় অশ্বগন্ধা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভেষজ। কর্টিসোল বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে করে দুশ্চিন্তা দূর করতে পারে অশ্বগন্ধা। ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রায় ভীষণ কাজের এই অশ্বগন্ধার চা। এতে ট্রাইএথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি উপাদান রয়েছে যা ঘুম আসতে সাহায্য করে।

রাতে খাওয়ার পরে অশ্বগন্ধা দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন।

কীভাবে বানাবেন দেখে নিন

একটি পাত্রে জল ফুটিয়ে নিন। জল ফুটে গেলে এতে অশ্বগন্ধার শেকড় দিয়ে ২থেকে ৩ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার গ্যাস থেকে নামিয়ে কিছুক্ষণ অশ্বগন্ধা ভিজতে দিন। এর পর ছাঁকনি দিয়ে কাপে ছেঁকে নিন, এবার এতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিন। রাতের খাবারের কিছুক্ষণ পর এই অশ্বগন্ধা চা খান।

এই পানীয়গুলো খাওয়ার পাশাপাশি এই কাজগুলো অবশ্যই করুন

ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘন্টা আগে এই হার্বাল টি খান।

স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিন। মন ভাল করতে সফ্ট মিউজিক শুনতে পারেন।

বেডরুমে সফ্ট লাইট জ্বালান কিংবা অন্ধকার করে রাখুন। এতে ঘুম তাড়াতাড়ি আসবে।

ফোন বিছানায় নিয়ে যাবেন না। তা হলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে বাধ্য।

ঘুমোতে যাওয়ার আগা দুশ্চিন্তা মন থেকে মুছে ফেলুন।