কিছু কিছু মানুষ আছেন, যাদের মাথার চুল আগাগোড়াই পাতলা হয়। আবার এমনও অনেকে আছেন, যাদের চুল এক কালে ঘন ছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে পাতলা হতে আরম্ভ করেছে এবং কিছুতেই আর আগের স্বাস্থ্যে ফেরানো যাচ্ছে না।
রূপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুল পাতলা হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। ক্ষেত্রবিশেষে এর বাইরের কোনও সমস্যাও থাকতে পারে। আবার সবার চুল একই সমস্যায় একভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় না। চুল পাতলা হওয়ার কারণগুলি হলো-
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: চুলের স্বাস্থ্যের উপর হরমোনের প্রভাব গভীর। অনেক নারীর চুলের প্রকৃতি বদলে যায় তাদের গর্ভাবস্থায়। তবে যারা পিসিওএসের মতো সমস্যায় ভুগছেন, তাদের চুল পাতলা হতে আরম্ভ করতে পারে।
শ্যাম্পু বা হেয়ারকেয়ার প্রডাক্টের রাসায়নিক: প্যারাবেন, সোডিয়াম লরেট সালফেট বা এসএলএসের মতো কেমিক্যাল ছাড়া বেশিরভাগ চুলচর্চার সামগ্রী তৈরিই হয় না। এগুলো অনেক সময় চুলের স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যত শীঘ্র সম্ভব প্রাকৃতিক শ্যাম্পু ব্যবহারের উপর জোর দিন।
থাইরয়েডের সমস্যা: থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ওভার বা আন্ডারঅ্যাকটিভ হলেও চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। থাইরয়েড হরমোন শরীরের এনার্জি লেভেল ও কলাকোষের বিভাজনের হার নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড ঠিকমতো কাজ না করলে ক্লান্ত লাগবে, ওজন বাড়তে বা কমতে পারে, বদলে যাবে চুলের প্রকৃতি ও স্বাস্থ্যও।
মানসিক চাপ : মানসিক চাপকে ছোট করে দেখা ঠিক নয়। এটা থেকে নানা শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। তার মধ্যে ওজন বাড়া বা কমা, চুলের স্বাস্থ্যহানিও থাকে।
সুষম খাদ্যাভ্যাস: শরীরে ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি থাকলে চুলের স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিনের বি আর ভিটামিন ডি ঘাটতি হলে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
সমাধান:
প্রত্যেকদিন শ্যাম্পু করার অভ্যাস বদলান: যারা প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু দিতে অভ্যস্ত, তারা নিজেদের অজান্তেই চুলের স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছেন। শ্যাম্পু মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে দুর্বলতর করে তুলছে। প্রতিদিন চুল ধুলে চুলে বেশি ময়লা বসবে, আরও পাতলা আর ফ্ল্যাট দেখতে লাগবে।
প্রাকৃতিক হেয়ারকেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহার করুন: প্রাকৃতিক, অরগ্যানিক, এসএলএস ও প্যারাবেনমুক্ত শ্যাম্পু ও অন্য হেয়ারকেয়ার প্রডাক্ট বেছে নিতে হবে। খুব বেশি প্রডাক্ট ব্যবহারের অভ্যেস থাকলে সেটাও কমানো দরকার। এমন শ্যাম্পু কিনুন, যা ফলিকল মজবুত করে।
হেয়ারকালার আর কাট : বাড়িতে নিজের ইচ্ছেমতো হেয়ারকালার ব্যবহার করবেন না, ভালো পার্লারে গিয়ে স্টাইলিস্টের পরামর্শ নিয়েই তবেই চুলে রং লাগান। হেয়ারকাটের ক্ষেত্রেও খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করাই ভালো।