চামচ দিয়ে নাকি হাত দিয়ে? কিভাবে খাবার খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়, জেনেনিন

খেতে কে না ভালোবাসে। আর খাদ্যরসিক বাঙালি হলে তো কথাই নেই। তবে খাবার শেষ করে হাতের আঙুল না চাটলে বোধ হয় পুরোপুরি পেটটা ভরে না। স্পুন, ফর্ক কিংবা চপ-স্টিক বিদেশি আদব-কায়দা সরিয়ে রেখে হাত দিয়ে খাওয়ার থিয়োরিতেই বাঙালি বেশি বিশ্বাসী।

জানা যায়, বহু প্রাচীনকাল থেকে আমাদের দেশে হাত দিয়ে খাওয়ার রেওয়াজ আছে। কিন্তু কেন চালু হল এই রীতি? এর পিছনেও রয়েছে কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।

দেখা গিয়েছিল হাত দিয়ে খাবার খেলে নাকি শরীরের দারুণ উন্নতি হয়, সেই সঙ্গে একাধিক রোগও দূরে পালায়। আর এই ধারণার মধ্যে যে কোনও ভুল ছিল না, সেকথা আধুনিক গবেষণাতেও প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। সেখানে যে সব তথ্য উঠে এসেছে সেগুলি হল:

খাওয়াটা হাতেরই কাজ: হাত হল এমন একটি অঙ্গ যা একাধিক কাজ করার জন্য তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল খাবার খাওয়া। তাই অকারণ কাঁটা-চামচ ব্যবহার প্রয়োজন নেই।

পুষ্টির ঘাটতি হয়না: একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে খাবার ঠিক মতো হজম হওয়ার সুযোগ পায়। আর যেমনটা সকলেরই জানা আছে, খাবার ঠিক মতো হজম হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান পেয়ে যায়।

শরীরচর্চার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ: হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় একাধিক পেশির সঞ্চালন হয়। ফলে হাতের পাশাপাশি সারা শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। আর এমনটা হওয়া মাত্র বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তও পৌঁছে যায়। ফলে শরীরের প্রতিটি অংশ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।

হজমের রোগ সেরে যায়: হাত দিয়ে খাবার খেলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগই পায় না। আসলে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় আমাদের হাতে থাকা বেশ কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া মাঝে মধ্যে শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি হজমের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মুখ, গলা এবং ইন্টেস্টাইনকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে: জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে তাড়াতাড়ি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই সবারই হাত দিয়ে খাবার খাওয়া উচিত। কারণ যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে হাত দিয়ে খাওয়ার সময় নাকে-মুখে গুঁজে খাওয়া সম্ভবই হয় না। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।