আরে মশাই কী মুশকিল বলুন তো! এমনটা একেবারেই ভাল নয় বলে দিলাম। এতদিন জানতাম সস্তায় কেনা মর্তমান বা কাঁঠালি দুটো নিয়ে টপাস করে গলায় চালান করে দিলে পেটও ভর্তি, শরীরও খুশি। কিন্তু একি! কলার পিছনেও আপনারা জোঁকের মতো লেগে গেলেন। এখন প্রশ্ন তুলছেল কলা খাওয়া ক্ষতিকারক কিনা। এবার বলুন তো গরীব মানুষ কেথায় যাবে!
আচ্ছা সত্যিই কি সকাল সকালে কলা খাওয়া চলবে না? আরে নানা দাঁড়ান দাঁড়ান। এখনই মতামত দেওয়ার সময় আসেনি। অনেক ব্যাপার আছে বুঝলেন। তারপর হবে চুরান্ত সিদ্ধান্ত।
পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা শরীরের গঠনে যে বাস্তবিকই দারুন উপকারে লাগে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই! কিন্তু সকাল সকাল খালি পেটে কলা খাওয়া চলবে না। কারণ এমনটা করলে কিছু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আর একথা আমার নয়, বিজ্ঞানিদের…গবেষণার!
ব্রেকফাস্টে কলা খেলে নিমেষে এনার্জির ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের চাহিদাও পূরণ হয়। কিন্তু…
সমস্যাটা কোথায়?
খালি পেটে কলা খেলে নিমেষে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুগার। তাই তো প্রতিদিন এইভাবে খালি পেটে শর্করায় পরিপূর্ণ কলা খাওয়াটা আদৌ স্বাস্থ্যকর কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
তবে উপায় আছে!
খালি পেটে না খেয়ে যদি অন্য খাবারের সঙ্গে খাওয়া যায়, তাহলে কিন্তু আর চিন্তা থাকবে না। বিশেষত যে খাবারে উপকারি ফ্যাট রয়েছে, এমন খাবারে সঙ্গে কলা খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। তাই একেবারে থেকে খালি পেটে না খেয়ে অল্প কিছু খেয়ে নিয়ে কলা খেতেই পারেন। তাতে কোনও সমস্যা নেই। প্রসঙ্গত, উপকারি ফ্যাট রয়েছে এমন খাবারগুলি হল- দুধ, বাদাম, দই, ডিম প্রভৃতি।
কলা আর মাথা ঘোরা:
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ব্রেকফাস্টে কলা ছাড়া অন্য কিছু মুখে না তুললে কিছু সময় মাথা ঘোরা শুরু হয়। সেই সঙ্গে হঠাৎ দুর্বল লাগার মতো লক্ষণও প্রকাশ পেতে পারে। তাই শুধু কলা নয়, সঙ্গে রাখুন আরও কিছু। তাহলেই কেল্লাফতে!
খেয়াল রাখুন…
কলার অন্দরে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন নানা উপকারি উপাদানের পাশাপাশি রয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ শর্করা, সেই সঙ্গে অল্প পরিমাণ অ্যাসিডিক এলিমেন্ট। এই দুটি উপাদান খালি পেট থাকাকীলন শরীরে প্রবেশ করা একেবারেই উচিত নয়। তাই সাবধান!
প্রাকৃতিক শর্করা তো!
অবশ্যই! তবে, সমস্যাটা কোথায় জানেন? চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর দেহ তাকে কাজে লাগানোর চেষ্টায় লেগে পরে। সে সময় শর্করা নিজের চরিত্র বদল করে অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়ে যায়। ফলে পাকস্থলির ক্ষতি হয়। আর এমনটা হলে বদ-হজম, গ্যাস-অম্বল সহ একাধিক পেটের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
দই-কলা চলতে পারে?
একদম পারে! তবে কেন জানেন? কারণ উপকারি ফ্যাট রয়েছে এমন খাবারের সঙ্গে কলা খেলে ফলটির মধ্যে থাকা অ্যাসিডিক এলিমেন্ট শরীরের কোনও ক্ষতি করতে পারে না। ফলে সার্বিকভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে শুরু করে।
আরেকটা সম্পর্ক তৈরি হতে পারে:
যেমনটা আগেও আলোচনা করেছি উপকারি ফ্যাট রয়েছে এমন খাবারের সঙ্গে কলাকে মিলিয়ে দিলে ব্রেকফাস্টে ফলাহার চলতেই পারে। তাই তো দইয়ের পাশাপাশি বাদাম অথবা অ্যাভোকাডোর সঙ্গেও কলা খাওয়া চলতে পারে। এমনটা করলে শরীরে হটাৎ করে শর্করা এবং অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ে না। ফলে কোনও রকম ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তাহলে কী বুঝলেন মশাই? কলা চলতেই পারে। তবে একা একা নৈব নৈব চৈ!