অনিয়মিত খাদ্যাভাসের কারণে আমাদের দেশের অনেক মানুষ পুষ্টি ঘাটতিতে ভুগে থাকে। সে হতে পারে কম বয়সী বা বেশি বয়সী। আর এ কারণে বেশিরভাগ মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম হয়। জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষ ভিটামিন ডি,আয়রন, ভিটামিন বি-১২ এবং ফোলেটের অভাবে ভুগে থাকে। এদিকে করোনাকালে আমাদের সবারই উচিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত খাবার খাওয়া।
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীব থেকে আমাদের রক্ষা করে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হলে আমরা সহজে সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। এজন্য রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভালো রাখার জন্য আমাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে ভেষজ জাতীয় উপাদান। ভেষজ জাতীয় উপাদান থেকে যে ইমিউনোমোডুলেটর পাওয়া যায় তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার শরীরকে উপযোগী করে তোলে।
ভেষজ উদ্ভিদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের খাবার তালিকায় এগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।
এমন কিছু ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে আলোচনা করা হবে যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
গুলঞ্চ: গুলঞ্চ অথবা গিলয় খুব উপকারী একটি ভেষজ উদ্ভিদ। সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে গুলঞ্চ। এছাড়া হাঁপানি রোগ, দীর্ঘস্থায়ী কাশির সমাধান দিতে পারে গুলঞ্চ।
অশ্বগন্ধা: এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার কিছু অংশে পাওয়া যায় অশ্বগন্ধা। এতিহ্যগতভাবে এই ভেষজের অনেক উপকারিতা রয়েছে। অশ্বগন্ধা হাজার হাজার বছর ধরে একটি পুনরুজ্জীবিত ভেষজ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া দুঃশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে অনিদ্রার সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয় অশ্বগন্ধা।
তুলসী: তুলসি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এ আমরা কম বেশি সবাই জানি। তুলসীর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো শ্বাসযন্ত্রের রোগগুলো এড়াতে সাহায্য করে।
এই ভেষজটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং উদ্বেগ, চাপ এবং ক্লান্তির মতো পরিস্থিতিতে কার্যকর। তুলসী কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং এই ভেষজটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং এটি ডিটক্সে সহায়তা করে।
আমলকি: আমলকির অনেক উপকারিতা আছে। এই ভেষজটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এটি লিভার, হার্ট, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুস সহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর সুস্থ কার্যকারিতা সমর্থন করে। আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যামিনো অ্যাসিড, পেকটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো পুষ্টি উপাদান। এই ভেষজটির নিরাময়ের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন প্রদাহবিরোধী, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, হেপাটোপ্রোটেকটিভ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে আমলকি।