বর্ষাকাল এলেই সাথে নিয়ে আসে একরাশ দুশ্চিন্তা। বাড়ির ছোট সদস্যদের নিয়েই চিন্তাটা বেশি। কারণ এই মৌসুমে বড়দের থেকে ছোটরাই সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই শুরু থেকেই বর্ষায় কোন কোন রোগে পড়তে পারে শিশুরা এবং এ থেকে সাবধান কীভাবে থাকা যায় সে সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি।
প্রথমেই জেনে নিই, এই মৌসুমে কোন কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারে শিশুর শরীরে
১। সর্দি-জ্বর
এই সময়ে বাতাসে নানা রকম জীবাণুর উপস্থিতি বাড়ে। রোদ-বৃষ্টির ঠাণ্ডা-গরম আবহাওয়ায় অনেক শিশুরই ঠান্ডা লেগে যায়। বিশেষ করে যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। অনেকের আবার এই সময়ে সাধারণ ফ্লুও হয়ে থাকে। জ্বর, ক্লান্তি, গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা, কাশি, গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় ফ্লু হলে। তবে অনেকের আবার এর পাশাপাশি পেটের সমস্যাও দেখা দেয়।
২) ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া
বর্ষায় মশার উৎপাত বাড়ে বহুগুণে। সঙ্গে বাড়ে মশার কামড়ে সংক্রমিত রোগও। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ বেশি দেখা যায় বর্ষায়। প্রবল জ্বল, মাথাব্যথা, গাঁটে ব্যথা, বমি, পেটের গোলমাল, র্যাশের মতো সমস্যা দেখা যায় এই সব অসুখে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা, প্রচুর পরিমাণে জল, পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া করা প্রয়োজন সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য।
৩। খাবার এবং জলবাহিত সংক্রমণ
বর্ষায় জল বা খাবারের মাধ্যমেও নানা রকম রোগ ছড়ায়। এর মধ্যে আছে টাইফয়েড, কলেরা, জন্ডিস ইত্যাদি। এই ধরনের জটিল রোগ সহজেই কাবু করে দিতে পারে বাচ্চাদের। সংক্রমিত খাবার বা জল খেলেই অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। নানা রকম উপসর্গ দেখা যায় এই ধরনের রোগগুলিতে যার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৪। ত্বকের সমস্যা
বর্ষায় ছত্রাকজনিত সংক্রমণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টির জল বা জমে থাকা নোংরা জল গায়ে লেগে বাচ্চাদের ত্বকে এ সময়ে নানা রকমের ইনফেকশন বা র্যাশ হতে পারে। পায়ের নখে চট করে এই জাতীয় সংক্রমণ হয়ে যায়। তবে বাচ্চাদের একটু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে, শুকনো পোশাক পরালে বা গা-হাত-পা মুছিয়ে দিলে এই ধরনের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
কীভাবে শিশুদের সুস্থ্য রাখবেন?
১। বৃষ্টিতে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে স্নান করিয়ে শুকনো করে গা মুছিয়ে দিন। কিংবা ভালো করে গা মুছে শুকনো পোশাক পরিয়ে দিন।
২। হাত-পা নিয়মিত ধোয়ার অভ্যাস করান। খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুতে শেখান।
৩। বাইরের ফুচকা জাতীয় খাবার এই সময়ে একটু এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪। খুব বেশি তেল-ঝাল-মশলাওয়ালা খাবার না দেওয়াই ভালো। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার কিংবা প্রসেস করা খাবারও না খাওয়ানো চেষ্টা করুন।
৫। পুষ্টিকর খাবার দিন। দুপুর বা রাতের খাবারে যেনো পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং সবুজ শাক-সব্জি থাকে। মৌসুমি ফল খেতে হবে। যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত হয়, সে দিকে নজর দিন।
৬। সারাদিন পরিমাণ মতো জল খাওয়ান। শরীরে যেনো কোনোভাবেই শুকিয়ে না যায়।