শরীরে রোগব্যাধি নেই এইরকম মানুষ কমই আছে। তবে শরীরকে সুস্থ রাখার কিছু কৌশল রয়েছে। যা রপ্ত করতে পারলে অনেক দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব। শরীর আর মনের সমন্বয়ে বেড়ে ওঠা নিজেকে ঠিক রাখতে আপনি আশ্রয় নিতে পারেন যোগব্যায়ামের। যাকে ইয়োগা চর্চা হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। শুরুতে একটু কষ্টকর এবং পরিশ্রমী মনে হলেও কিছু দিনের নিয়মিত অনুশীলনে এ ব্যায়ামে মানিয়ে নিতে পারবেন নিজেকে। এরপর খুব কাছ থেকেই দেখতে পারবেন শরীরের হাত ধরে বেড়ে ওঠা আপনার মনের পরিবর্তন।
৫ বছর বয়স থেকে শুরু করে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম/ইয়োগা চর্চা করা শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। যোগ ব্যায়াম/ইয়োগা চর্চা মন ও শরীরের সঙ্গে সংযোগ এবং উৎকর্ষ বৃদ্ধি করে। যোগ ব্যায়ামের সুবিধা হল মনের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম খুবই জরুরী। করোনা সংক্রমণ রোধেও যা সবচেয়ে ফলপ্রসূ। এছাড়া নতুন স্বাভাবিক অবস্থায় শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা সুস্থতার জন্যে আবশ্যক। অন্যথায় আরো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
তাই এই সময় নিয়মিত ইয়োগাগুলো চর্চা করতে পারেন। এই যোগব্যায়াম বা ইয়োগাগুলো চর্চার কিছু পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে ‘শশাঙ্গাসন’ একটি। আজ আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করবো।
শশাঙ্গাসন
প্রথমে জাজেন বা বজ্রাসনের মতো করে বসুন। এবার এ অবস্থা থেকে হাঁটুতে ভর করে শরীরের ওপরের অংশ তুলুন। মাথা সোজা করুন। এবার আস্তে আস্তে মাথা সামনের দিকে বাঁকিয়ে কপাল হাঁটুর সাথে লাগাতে চেষ্টা করুন। এবার হাত দুটো দিয়ে দুপায়ের গোড়ালি ধরুন। দম স্বাভাবিক থাকবে। থুতনি গলার শেষ প্রান্তে থাকবে। দুপায়ের গোড়ালি লেগে থাকবে। মাথার তালু মাটিতে থাকবে (ছবির মতো)। তবে জোর করে সঠিক ভঙ্গিমায় প্রথমেই যেতে চেষ্টা করবেন না। চর্চা করলে ধীরে ধীরে সঠিক ভঙ্গিমায় যেতে পারবেন। শেষ অবস্থানে গিয়ে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড থাকুন।
উপকারিতা
– এ আসন নিয়মিত অভ্যাস করলে স্নায়ুর মটর নিউরোন সুস্থ-সাবলীল থাকে। ফলে যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়।
– মেরুদণ্ড নমনীয়-কমনীয় হয়। মেরুদণ্ডের সংযোগস্থলগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বজায় থাকে বলে লোয়ার মটর নিউরোন বেশি কর্মক্ষম হয়।
– টনসিলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় বলে টনসিলের সমস্যা থাকলে তা দূর হয়ে যায়। ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা দূর হয়। এ আসন নিয়মিত করলে টনসিলের রোগ সম্পূর্ণরূপে সেরে যায়। তবে ক্রনিক হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
– পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে তাকে সুস্থ-সতেজ রাখে। ফলে বিভিন্ন মেয়েলি রোগে উপকার পাওয়া যায়।
– থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের হরমোন প্রবাহ ঠিক রাখে।
– শশাঙ্গাসনের নিয়মিত অভ্যাস লম্বা হতে সাহায্য করে।
– এ-ছাড়াও অগ্ন্যাশয়, যকৃৎ ও প্লীহার কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়।
– যারা ক্ষুধামান্দ্যয় ভোগেন তাদের এ আসন করলে ক্ষুধা বাড়ে।
সতর্কতা: যে কোনো ইয়োগা চর্চার আগে অভিজ্ঞ ডাক্তার বা ইয়োগা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।