ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য। এটা শরীরের জন্য বহু রকম ভাবে উপকারী ও স্বাস্থের জন্য অতি উত্তম। পূর্বে ধারণা করা হত, বেশি ডিম খাওয়া ভালো না। কারণ, ডিমে অনেক কোলেসটারোল আছে, যা একসময় অসুবিধা করতে পারে। বর্তমান সমীক্ষায় দেখা যায়, ডিমে যে চর্বি থাকে তার তিন-চতুর্থাংশই হচ্ছে, হার্ট ও রক্তনালীর জন্য উপকারী অসম্পৃক্ত চর্বি, আর বাকি সামান্যটুকু অহিতকর সম্পৃক্ত (স্যাচুরেটেড) চর্বি। সবকিছু মিলে ডিম আমাদের জন্য ভালো।
ডিমে আছে ভিটামিন ‘সি’ বাদে প্রায় সব রকম ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন, কোলিন ও সিলেনিয়ামসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ। ডিমের কোলেসটারোল কোষপ্রাচীর গঠনে, স্নায়ুর আবরণ, ভিটামিন ‘ডি’ ও হরমোন তৈরিতে খুব দরকার। ডিম হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড আছে। ডিমের কোলিন মস্তিষ্ক গঠন ও উহা সতেজ রাখার জন্য প্রয়োজন। এসব ভিটামিন, খনিজ, কোলেস্টরোল ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিডের প্রায় পুরোটাই থাকে ডিমের কুসুমে। তাই পুষ্টির কথা বিবেচনা করলে কুসুম বাদে ডিম খেয়ে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। স্বাদে ও গুণে কুসুমটাই অনন্য।
ডিমে আছে অতি উঁচুমানের প্রোটিন, যা শরীর গঠন ও তার ক্ষয়পূরণে বিশেষ ভ‚মিকা রাখতে পারে। শিশুর ক্রমবিকাশে- ভাত বা খিচুড়ি খাওয়া শুরু করলে, অনেক সময়ই সাথে ডিম খাওয়ার কথা আসে।
বিশেষ কোন সমস্যা না থাকলে, দিনে একটি করে ডিম খাওয়া যায়। চর্বিযুক্ত মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার খেয়ে যতটা কোলেস্টরোল বাড়ে, ডিম খেয়ে ততটা বাড়ে না। কোলেস্টরোল নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিমের চেয়ে চর্বিযুক্ত মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, স্থুলতা, ধূমপান ও বিষণ্ণতার দিকে বেশি নজর দেয়া উচিত।
সাদা ও বাদামি ডিমে পুষ্টিগতভাবে কোন পার্থক্য নেই। হাঁসের ডিম ও মুরগির ডিম সমান উপকারী। তবে হাঁসের ডিম বড় হওয়ায় এতে পুষ্টিমান কিছুটা বেশি থাকে। বয়েল ও ফ্রাই করা ডিমেও তেমন একটা তফাৎ নেই। সবচেয়ে ভালো-অল্প অলিভ অয়েল দিয়ে সামান্য তাপে ডিম ফ্রাই করে খেলে।
রুক্ষ চুলের জন্য ডিম অসাধারণ একটা প্রোটিন প্যাক। ডিম ফেটিয়ে চুলে আধঘণ্টা মাখিয়ে রেখে শ্যাম্পো করলে, চুল হবে নরম ও ঝলমলে।